Main Menu

মার্কিন দূতাবাস ছেড়ে বাসায় ফিরেছেন বরখাস্ত ডিএজি এমরান

বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: আশ্রয় চেয়ে সপরিবারে ঢাকার মার্কিন দূতাবাসে হাজির হওয়া বরখাস্ত ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি) এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া পুলিশি নিরাপত্তায় রাজধানীর লালমাটিয়ার বাসায় ফিরেছেন। গ্রেপ্তারের শঙ্কা নেই বলে সরকারের তরফ থেকে দূতাবাসকে আশ্বস্ত করা হয়েছে। দূতাবাসের কর্মকর্তারা এমরানকে এ তথ্য জানালে তিনি বাসায় ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাত সোয়া ৮টায় এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘শুক্রবার বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত দূতাবাসে অপেক্ষা করেছি। আমাকে গ্রেপ্তারের আশঙ্কা নেই বলে সরকারের পক্ষ থেকে দূতাবাসকে জানানো হয়েছে। দূতাবাসের কর্মকর্তারা আমাকে আশ্বস্ত করেছেন। পরে পুলিশ এস্কট দিয়ে আমাকে বাসায় পৌঁছে দিয়েছে।’

এর আগে শুক্রবার রাত পৌনে ৮টার দিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনার মো. শহিদুল্লাহ সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘দুই ঘণ্টা আগে পরিবার নিয়ে বরখাস্ত ডিএজি এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া ঢাকার মার্কিন দূতাবাসে এসেছিলেন। কিছুক্ষণ আগে তিনি বেরিয়ে গেছেন।’

বিকেলে এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া এক ক্ষুদেবার্তায় সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘আমি মার্কিন দূতাবাসে আজকে পুরো পরিবারসহ আশ্রয়ের জন্য বসে আছি। বাইরে পুলিশ। আজকে আমাকে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে ……..। আমার ফেসবুক মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপে গত ৪-৫ দিন যাবত অনবরত হুমকি-ধামকি দেওয়া হচ্ছে। এই সরকার ভালবাসার প্রতিদান দেয় জেল দিয়ে। আমার আমেরিকার কোনো ভিসা নেই। স্রেফ ৩টা ব্যাগে এক কাপড়ে আমার ৩ মেয়েসহ কোনোক্রমে বাসা থেকে বের হয়ে এখানে বসে আছি। দোয়া করবেন আমাদের জন্য।’

তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের মূখপাত্র ব্রায়ান শিলার সংবাদ মাধ্যমকে শুক্রবার সন্ধ্যায় বলেন, ‘এ মুহূর্তে বিষয়টিতে আমাদের কাছে দেওয়ার মতো কোনো তথ্য নেই।’

গত ৪ সেপ্টেম্বর ডিএজি এমরান সাংবাদিকদের বলেন, ‘শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে বিবৃতিতে সই করব না।’

পরদিন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘চিঠিতে সই না করার বক্তব্য দিয়ে এমরান শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন।’

পরে আজ শুক্রবার এসে ডিএজি এমরানকে অব্যাহতি দিয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সলিসিটর (জিপি/পিপি শাখা) অনুবিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। সলিসিটর রুনা নাহিদ আকতার সই করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘দ্য বাংলাদেশ ল অফিসারস অর্ডার, ১৯৭২’ এর ৪(১) অনুচ্ছেদ অনুসারে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়ার নিয়োগাদেশ জনস্বার্থে বাতিলক্রমে তাকে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো।’

নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিচার প্রক্রিয়া স্থগিত করতে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনসহ ১৬০ বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তির প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া খোলাচিঠির পক্ষে অবস্থান নেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া। এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের পক্ষ থেকে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে পাল্টা বিবৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে তাতে তিনি সই করবেন না বলে জানিয়ে দেন।

এমরান সাংবাদিকদের বলেন, ‘রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের পক্ষ থেকে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে পাল্টা বিবৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিষয়ে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে জানানো হয়। যেখানে বিকেল ৪টার মধ্যে বিবৃতি সই করার কথা বলা হয়। তবে, আমি ব্যক্তিগতভাবে সই করবো না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি সই করার সঙ্গে একমত নই। আমি মনে করি ড. ইউনূসের বিষয়ে যে বিবৃতি ও পাল্টা বিবৃতি দেওয়া হচ্ছে সেটির প্রয়োজন নেই। ওনার বিরুদ্ধে যে মামলাগুলো চলছে তা অন্যভাবে ডিল করা যেত। এটা ওনাকে চাপে রাখার জন্যই করা হচ্ছে বলে মনে হয়েছে। উনি বাংলাদেশের জন্যই যে শুধু সম্মান বয়ে এনেছেন তা কিন্তু নয়, উনি সারাবিশ্বের সম্পদ।’

Share





Related News

Comments are Closed