সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসায় ‘অ্যান্টিভেনম’ সারা দেশে সরবরাহ

বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: আসন্ন বর্ষা মৌসুমের কথা চিন্তা করে দেশের বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসায় অ্যান্টিভেনম পর্যাপ্ত মজুত ও সরবরাহ করা হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসার জন্য অ্যান্টিভেনম ইনজেকশন সরবরাহ করা হয়।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, অধিদফতরের পক্ষ থেকে প্রত্যেক জেলা-উপজেলায় অ্যান্টিভেনম দেওয়া হয়। তাছাড়া চিকিৎসকদের নিয়মিত প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়। তবে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের চিকিৎসকরা নিরাপত্তাজনিত কারণে অ্যান্টিভেনম প্রদানে অনেক সময় বিরত থাকেন। কারণ অ্যান্টিভেনম প্রয়োগে অনেক সময় শরীরে তীব্র পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতি বছর প্রায় ৫০ লাখ মানুষ সাপের ছোবলের শিকার হচ্ছেন। এর মধ্যে প্রায় ২৫-২৭ লাখ মানুষের শরীরে বিষ প্রবেশে প্রায় দেড় লাখের মৃত্যু ও প্রায় পাঁচ লাখ লোক অন্ধ ও চিরস্থায়ী পঙ্গু হয়ে যাচ্ছে। আফ্রিকার ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সাপে কাটার ঘটনা সবচেয়ে বেশি লক্ষ করা যায়।
গবেষকরা বলছেন, বর্ষা মৌসুমে সকাল ও সন্ধ্যায় সাপে বেশি ছোবল দেয়। বন্যাপ্রবণ এলাকায় সাপে বেশি ছোবল দেয়। শীতকালে গোখরা সাপের দংশনের ঘটনা ঘটে। বর্ষাকালে প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাপে কাটা রোগী হাসপাতালে আনার পথে মৃত্যু ঘটে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী, প্রতি বছর দেশে সাপে প্রায় ৯ লাখ মানুষকে ছোবল দেয়। এর মধ্যে প্রতিদিন গড়ে ১৬-২০ জন মানুষ মারা যায়, বছর শেষে সেই হিসাব ছয় হাজারে গিয়ে ঠেকে। বিশেষ করে বন্যার সময় দেশে সাপের উপদ্রব বাড়ে। এ ছাড়া হাওর ও উপকূলীয় অঞ্চলে সাপের উপদ্রব বেশি। গত বছর দেশে সর্পদংশন-সংক্রান্ত নিয়মিত জরিপ হওয়ার কথা থাকলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে সেটি করা সম্ভব হয়নি। সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসায় প্রতি বছর সরকার প্রায় ১০০ মিলিয়ন টাকার অ্যান্টিভেনম ক্রয় করে। এসব অ্যান্টিভেনম আসে ভারত থেকে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের নন-কমিউনিকেবল ডিজিজের (এনসিডিসি) পরিচালক অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন সংবাদ মাধ্যমকে জানান, যেসব অঞ্চলে সাপের কামড়ে মানুষের মৃত্যু হয় সেসব অঞ্চলে যদি সাপে কাটার সঙ্গে সঙ্গে দ্রুতগতিতে অ্যান্টিভেনম দেওয়া যায় তাহলে অবশ্যই সাপের কামড়ে মৃত্যু কমানো সম্ভব। সারা দেশের সরকারি হাসপাতালে সাপে কাটা রোগীদের বিনামূল্যে অ্যান্টিভেনম ইনজেকশন দেওয়া হচ্ছে।
ফরাসি চিকিৎসক আলবার্ট কেলমেট কর্তৃক ১৮৯৫ সালে অ্যান্টিভেনম আবিষ্কারে সাপে কাটা লাখ লাখ রোগীকে নতুন জীবনের দিশা দিয়েছে।
Related News

কিডনিতে পাথর: কারণ, উপসর্গ ও সতর্কতা
স্বাস্থ্য ডেস্ক : আমাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ হল কিডনি। শরীরের সার্বিক সুস্থতা বজায় রাখতেRead More

ওসমানী হাসপাতালে শুরু হচ্ছে ‘কক্লিয়ার ইমপ্লান্ট ডিভাইস’ স্থাপন
বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রথমবারের মতো আগামী ২৪মে ‘কক্লিয়ার ইমপ্লান্ট ডিভাইসRead More
Comments are Closed