Main Menu

দেশে ৬ মাসে অগ্নিদুর্ঘটনায় ১২৮ মৃত্যু : সিপিডি’র গবেষণা

বৈশাখী নিউজ ডেস্ক : দেশে গত ৬ মাসে গড়ে প্রতি দুইদিনে একটি করে অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটেছে। তৈরি পোশাক কারখানায় অগ্নিদুর্ঘটনার পাশাপাশি বিভিন্ন খাতের কারখানায় অগ্নিকান্ডের ঘটনা বাড়ছে।

বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারী) বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) করা ‘কর্মক্ষেত্রে অগ্নিদুর্ঘটনা ও শ্রমিক নিরাপত্তা: নিরসনে উদ্যোগ কোথায়?’ শীর্ষক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে আসে। এ গবেষণায় সহায়তা করে ক্রিস্টিয়ান এইড।

রাজধানীর ধানমন্ডিতে সিপিডির কার্যালয়ে গবেষণার ফল তুলে ধরেন সংস্থাটির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন এবং ক্রিস্টিয়ান এইডের প্রোগ্রাম ম্যানেজার নুজহাত জাবিন উপস্থিত ছিলেন।

গবেষণার তথ্য অনুযায়ী গত বছরের ৮ জুলাই নারায়ণগঞ্জে সজিব গ্রুপের হাশেম ফুড কারখানায় অগ্নিকান্ডের পর ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬ মাসে ৮২ টি অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটছে। পোশাক বহির্ভূত শিল্প-কারখানা, বাসাবাড়ি, হাসপাতাল এবং বাসাবাড়িতে এসব ঘটনা ঘটে। শুধু ঢাকা অঞ্চলে ২৯টি অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটে। উল্লিখিত সময়ে ১২৮ জনের মৃত্যু এবং ২১৩ জন আহত হন। সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিভাগে, এর পরই চট্টগ্রাম বিভাগ।

সরকারি প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা এবং উদ্যোগের বিষয় তুলে ধরে বলা হয়, তৈরি পোশাক কারখানায় ৭৫ শতাংশ সেইফটি কমিটি রয়েছে। একই সঙ্গে অন্য কারখানায় রয়েছে মাত্র ৭ শতাংশ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার হারও তুলনামূলকভাবে কম নয়। দিনে দিনে এর হার বাড়ছে। শিল্পপ্রতিষ্ঠানে এ ক্ষতির হার অনেক বেশি। বাড়িঘরে ঘটা দুর্ঘটনায়ও ক্ষতির পরিমাণ বেশি। ঝুঁকিপূূর্ণ জায়গা হিসেবে শপিং মল সবচেয়ে ঝুঁকিপূূর্ণ। এ হার ৪২ শতাংশ। এর পরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ২২ শতাংশ এবং হেলথ কেয়ার ইনস্টিটিউট ১৯ শতাংশ ঝুঁকিপূর্ণ জায়গা।

ড. মোয়াজ্জেম জানান, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) সরকারি-বেসরকারি খাতকে নিয়ে ২৪ সদস্যের একটি কমিটি করে। একই সঙ্গে নয় সদস্যের একটি সাব কমিটি করে। এ সাব কমিটি ১০৮টি টিমের মাধ্যমে তৈরি পোশাক কারখানা নয় এমন ৪২ হাজারের মতো কারখানা ধাপে ধাপে পর্যবেক্ষণের মধ্যে নিয়ে আসতে চায়। একেকটি টিম ৫০টি কারখানা পর্যবেক্ষণ করবে। লাইসেন্সিং, পরিবেশগত দূষণ, দাহ্য পদার্থ পরিচালনা ও সার্টিফিকেটসহ ৮০টি বিষয়ের তথ্য যাচাই করে সংগ্রহ করে থাকে এ টিম। কিন্তু তাদের তথ্য সংগ্রহের তালিকায় শ্রমিক-সংক্রান্ত কোনো বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, যেটি উদ্বেগজনক।

অক্টোবর-ডিসেম্বর তিন মাসে প্রাথমিক অবস্থায় এ টিম ৫ হাজার কারখানা পর্যবেক্ষণের সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু তারা করেছে ৮৭৫ টি, যা সন্তোষজনক নয়। টার্গেটকৃত কারখানার মধ্যে ঢাকা অঞ্চলে মাত্র ১৬ শতাংশ ও চট্টগ্রামে ২২ শতাংশ পর্যবেক্ষণ করে। এ পুরো প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থাকে যুক্ত না করায় উদ্বেগ প্রকাশ করে সিপিডি।

ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, তৈরি পোশাক শিল্পের বাইরেও অনেক কারখানা রয়েছে। এসব কারখানার নিরাপত্তার বিষয় দেখারও এখন সময় এসেছে। সরকারি যেসব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে সেগুলো সন্তোষজনক নয়। কারখানা পরিদর্শনে শ্রমিক নিরাপত্তা এবং শিশুশ্রম নিয়ে কোনো কথা বলা হয়নি। এটি উদ্বেগজনক।

Share





Related News

Comments are Closed