Main Menu

হাকালুকি হাওরে অবাধে চলছে পাখি নিধন

বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: হাকালুকি হাওরে পৃথিবীর শীতপ্রধান দেশ থেকে ছুটে আসা অতিথি পাখিসহ দেশিয় পাখি শিকারে তৎপর হয়ে উঠেছে অসাধু চক্র। জলাশয়ের কিনারে বিষটোপসহ নানাভাবে ফাঁদ পেতে তারা অবাধে পাখি শিকার করছে। প্রশাসনের কার্যকর উদ্যোগ না থাকায় কোনোভাবেই পাখি নিধন থামছে না। এতে ক্ষুব্ধ স্থানীয় পাখিপ্রেমীরা। তারা পাখি শিকার বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

জানা গেছে, প্রতিবছর শীতের শুরুতেই বিশ্বের বিভিন্ন শীতপ্রধান দেশ থেকে হাকালুকি হাওরে নানা প্রজাতির পাখি আসে। এসব পাখির মধ্যে রয়েছে বালিহাঁস, ভুতিহাঁস, গিরিয়া হাঁস, ল্যাঞ্জা হাঁস, গুটি ইগল, কাস্তেচরা, কুড়া ইগল, সরালি, পানভুলানি, কালিম, সাদা বক, কানি বক, পানকৌড়ি। এরমধ্যে দেশীয় প্রজাতির নানা জাতের পাখি রয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, হাওরে অতিথি পাখি আসার সঙ্গেই পাখি শিকারি চক্র নানা তৎপরতা শুরু করে। হাওরখাল, মাইছলা, পোয়ালা, গজুয়া, পিংলা ও বাইয়াবিলে বেশি শিকারের ঘটনা ঘটছে। চক্রটি রাত-দিন ফাঁদ পেতে ও বিষটোপে পাখি শিকার করছে। এছাড়া জাল পেতে ও প্রভাবশালীরা বন্দুক দিয়েও পাখি শিকার করেছ। বিষটোপ খেয়ে পাখির পাশাপাশি অনেক খামারির হাঁসও মারা যাচ্ছে। শিকারিরা এসব পাখি বিভিন্ন বাজারে নিয়ে বিক্রি করছে। বিভিন্ন হোটেলে এসব পাখির মাংস বিক্রি হচ্ছে। প্রভাবশালীদের ঘরেও যাচ্ছে।

হাওরের হাল্লা গ্রামের পাখিবাড়ির বাসিন্দা আক্তার আহমদ শিপু বলেন, হাওরে প্রতিবছরের মতো এবারও অতিথি পাখি এসেছে। বছরজুড়ে আমাদের বাড়িতে পাখিরা বসবাস করে। শিকার বন্ধে রাতে পাহারা দেই। এরপরও নানাভাবে ফাঁদ পেতে শিকারিরা পাখি শিকার করছে। বাধা দিলে হুমকি-ধমকি দেয়।

স্থানীয় পরিবেশকর্মী রিপন দাস বলেন, হাওরে পাখির সংখ্যা দিন দিন কমছে। এর কারণ হচ্ছে, অবাধে পাখি শিকার, পাখির আবাস্থল ধ্বংস ও খাদ্য সংকট। পাখি শিকার বন্ধ না হলে এখানে পাখি আর আসবে না। তা রোধ করতে হলে প্রশাসনের পাশাপাশি সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

পাখি শিকারের বিষয়টি স্বীকার করে বন বিভাগের হাকালুকি (বড়লেখা) বিটের দায়িত্বে থাকা জুনিয়র ওয়াইল্ডলাইফ স্কাউট তপন চন্দ্র দেবনাথ বলেন, শিকারিরা বিট অফিস থেকে দূরের বিলগুলোর মধ্যে পাখি শিকার করে। গুলির শব্দ শুনে ঘটনাস্থলে যেতে ২ থেকে ৩ ঘন্টা লেগে যায়। এরমধ্যেই শিকারিরা পালিয়ে যায়। বিশাল হাওর এলাকায় জনবল সংকট নিয়ে কাজ করছি। একটা মোটরসাইকেল রয়েছে, যা চালাতে গেলে ৫০ বার বন্ধ হয়। ৩১ ডিসেম্বর গুলির শব্দ পেয়ে হাওরখালে একাই যাই। ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই শিকারিরা চলে যায়।

বড়লেখা উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা (ইউএনও) খন্দকার মুদাচ্ছির বিন আলী জানান, পাখি শিকার রোধে আমরা জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছি। যদি কেউ পাখি শিকার করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Share





Related News

Comments are Closed