Main Menu

ছাতকে বানভাসীদের দুর্ভোগের শেষ নেই

ছাতক প্রতিনিধি: ছাতকে সার্বিক বন্যা পরিস্থিরি উন্নতি হলেও বিভিন্ন এলাকায় এখনো সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। শহরের বন্যার পানি কমলেও বেশিরভাগ গ্রামে আরও অবনতি ঘটেছে। আবার কোথাও কোথাও রয়েছে স্থিতিশীল।

ক’দিনের অবিরাম বর্ষণে ছাতক শহরের বিভিন্ন এলাকা এখনও পানিতে প্রায় ডুবে আছে। যে সড়কে দাপিয়ে বেড়িয়েছে মোটরযান আজ সেই সড়কে চলছে নৌকা। যাদেরকে রাস্তায় দেখা যাচ্ছে তারা ছুটছে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে।

নিম্নআয়ের মানুষ, দিনমজুররা আশ্রয় নিচ্ছেন আশ্রয়কেন্দ্রে, বড় নৌকা আর যাদের অবস্থা কিছুটা ভালো তারা উঠেছেন আবাসিক হোটেলে। কেউ কেউ আছেন প্রতিবেশী ও আত্মীয়ের বাসায়। এছাড়া কোন কোন এলাকার বাঁধ ভেঙ্গে ও নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

এদিকে উত্তর ছাতকে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তীত রয়েছে। বিভিন্নস্থানে বন্যার পানিতে বাসা-বাড়ি, রাস্তা ঘাট তলিয়ে যাওয়ায় তিন লক্ষাধিক লোক হয়ে পড়েছেন পানিবন্দী। এ পানিবন্দী বানভাসীরা বিশুদ্ধ খাবার পানি ও খাদ্যাভাবে চরম মানবেতর দিন যাপন করছেন। ত্রাণের জন্য জানাচ্ছেন আকুল আকুতি।

বিভিন্নস্থানে প্রশাসনের তরফ থেকে সামান্য ত্রাণ বিতরণ করা হলেও তা কেউ পাচ্ছেন আবার কেউ পাচ্ছেন না বলে বানভাসীদের অভিযোগ। এর সাথে রয়েছে তাদের গবাদি পশু। মাঠঘাট, বাসা-বাড়ি পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় গো-খাদ্যের চরম সংকটে পড়েছেন তারা।

বন্যার পানি বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত করে ধীরে ধীরে নদী-খাল বেয়ে হাওরে নামছে। তবে ছাতক উপজেলার দক্ষিন ছাতকে পানি বাড়ছে। এতে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর জেগে উঠছে বন্যার ক্ষতচিহ্ন। বন্যায় অসংখ্য কাঁচা, আধাপাকা ঘরবাড়ি, ক্ষেতের ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভেসে গেছে চাষের মাছ।
এদিকে বন্যাদুর্গত এলাকায় অব্যাহত রয়েছে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম। প্রশাসনের পাশাপাশি বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে চলছে ত্রাণ বিতরণ।

শনিবার সকালে মাষ্টার হাবিবুর রহমান ফাউডেশনের উদ্দ্যোগে উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ আব্দুল হক স্মৃতি ড্রিগী কলেজে আশ্রয়কেন্দ্রে রান্না করা দুই শতাধিক বিরানীর প্যাকেট বানভাসীদের মধ্যে বিতরন করেন ছাতক প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রনি, শিক্ষক রেজ্জাদ আহমদ, সাংবাদিক খালেদ আহমদ, আব্দুস সাত্তার ও ফজল উদ্দিন প্রমুখ।

সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সুনামগঞ্জ জেলার চারটি পৌরসভা এলাকাসহ ৭৮টি ইউনিয়নের ১ হাজার ১৮টি গ্রামের ছয় লাখ ৬০ হাজার মানুষ বন্যা পরিস্থিতির শিকার। সুনামগঞ্জ জেলার পুরোটাই বন্যাকবলিত হলেও সবচেয়ে বেশি প্লাবিত হয়েছে ছাতক উপজেলা। ছাতক উপজেলার পৌরসভাসহ সকল ইউনিয়নের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। নদীর পানি হাওরে প্রবেশ করার কারণে সুনামগঞ্জের অনেক হাওর এখন পানিতে টইটুম্বুর।

প্রশাসনের হিসাব অনুযায়ী সুনামগঞ্জ জেলার ৫৪১টি আশ্রয়কেন্দ্রে মোট ১৮ হাজার ৪২৯ জন বন্যা আক্রান্ত মানুষ আশ্রয় নেন। সুনামগঞ্জের বন্যা আক্রান্ত মানুষের পাশে প্রশাসনের পাশাপাশি কাজ করছেন জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টা ভারী, অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। যদি উজানে বেশি বৃষ্টি হয়, তাহলে পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে।

সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, ‘সার্বিক পরিস্থিতি আমাদের পর্যবেক্ষণে রয়েছে। পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী আছে। আশ্রয়কেন্দ্রে শুকনা খাবার, রান্না করা খাবার বিতরণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

 

Share





Related News

Comments are Closed