Main Menu

সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির আরও উন্নতি, সুরমার পানি নামলো বিপৎসীমার নিচে

বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢল কমায় সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির আরও উন্নতি হয়েছে। একই সঙ্গে নদ-নদীর পানি আরও কমেছে। গত দুই দিন রৌদ্রজ্জ্বল থাকায় বন্যার পানি কমেছে সিলেটের উপজেলাগুলোতে।

এদিকে পরিবার নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন আশ্রয়কেন্দ্রের মানুষ। সিলেট শহরে সুরমা নদীর পানি কমে বর্তমানে বিপৎসীমার তিন সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বিভিন্ন বাসা বাড়ি থেকে নামতে শুরু করেছে পানি। কিছু এলাকায় পানি কমে যাওয়ায় আশ্রয়কেন্দ্র থেকে অনেক পরিবার বাড়িতে চলে আসছেন।

তবে সিলেট শহর এলাকার ড্রেন, ছড়া, খাল পরিষ্কার না থাকা এবং এক ড্রেনের সাথে অন্য ড্রেনের সংযোগ না থাকায় পানি নামছে না। ড্রেনের ময়লা উপরে উঠে এসে সৃষ্টি হয়েছে দুর্গন্ধময় পরিবেশের। বিভিন্ন বাসা বাড়িতে জমে আছে ময়লা পানি।

সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন জানান, শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় মাত্র ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময়ের পর আর কোনো বৃষ্টি হয়নি। তবে আগামী ৩ দিন সিলেট অঞ্চলের উপর দিয়ে দক্ষিণ/দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

তবে সিলেটে বন্যার পানি যখন কমছে এসময় আবারও ভারি বৃষ্টি হলে মানুষের দুর্ভোগ বেড়ে যাবে। ইতোমধ্যে বানের পানি কমাতে আশ্রয় কেন্দ্র থেকে কাঁদাপানি থাকা সত্ত্বেও বসতভিটায় গিয়ে উঠছে মানুষ। ফের পানি বাড়লে তাদের দুর্ভোগ হবে সীমাহীন।

শনিবার (২২ জুন) সকালে সুরমা নদীর পানি সিলেট পয়েন্টে কমে বিপৎসীমার নিচে নেমে এসেছে। তবে সুরমা ও কুশিয়ারার পানি অন্যান্য পয়েন্টে বিপৎসীমার উপরে রয়েছে।

সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে শনিবার সকাল ৯টায় বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এর আগে শুক্রবার এই পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৫২ সেন্টিমিটার উপরে ছিল।

সুরমা নদীর পানি সিলেট পয়েন্টে শনিবার সকালে বিপৎসীমার নিচে নেমে এসেছে। সকাল ৯টায় ১০ দশমিক ৭৪ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এর আগে শুক্রবার এই পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ০৯ সেন্টিমিটার উপরে ছিল।

শনিবার সকাল নয়টায় কুশিয়ারা নদীর পানি আমলশীদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। শুক্রবার এই পয়েন্টে পানি ৩৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

তবে কুশিয়ারা নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে অপরিবর্তিত রয়েছে। শুক্রবার এই পয়েন্টে পানি ১০ দশমিক ৪৮ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। শনিবার সকাল ৯টায়ও একই মাত্রায় প্রবাহিত হচ্ছিল।

তবে কুশিয়ারা নদীর পানি শেরপুর পয়েন্টে গতকালের তুলনায় আরও কমেছে। শনিবার সকাল ৯টায় বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এর আগে শুক্রবার এই পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

এছাড়া আজ শনিবার লোভা, সারি, ডাউকি, সারিগোয়াইন ও ধলাই নদীর পানি আরও কমেছে।

এদিকে বন্যা পরিস্থিতিতে পানিবন্দী মানুষ খাদ্য সংকটে পড়েছেন। বন্যাদুর্গত এলাকায় বিশুদ্ধ পানির অভাব দেখা দিয়েছে।

জেলা প্রশাসন জানায়, বৃষ্টিপাত কমতে শুরু হওয়ায় শুক্রবার সকাল থেকে সূর্য ওঠায় বন্যা পরিস্থিতির আরও উন্নতি হয়েছে। সরকারি বেসরকারিভাবে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

শুক্রবার পর্যন্ত সিলেট সিটি করপোরেশনসহ জেলার ১৩টি উপজেলায় ১ হাজার ১৭৫ মেট্রিকটন চাল বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও নগদ ৫৩ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা, ১৯ লাখ টাকার শিশু খাদ্য, ১৯ লাখ টাকার গো খাদ্য ও ৪ হাজার ৭৯৫ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

 

Share





Related News

Comments are Closed