Main Menu

এক যুগেও আলোর মুখ দেখেনি সাগর-রুনি হত্যার তদন্ত প্রতিবেদন

বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যার এক যুগ অতিক্রান্ত হয়েছে। বারবার তদন্ত সংস্থা ও তদন্ত কর্মকর্তা বদলেছে, কিন্তু রহস্যের জট খোলেনি। এখনও আসামি শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।

জব্দ আলামত পরীক্ষা ও নিহতদের খোয়া যাওয়া ল্যাপটপ উদ্ধারের পর্যায়েই আটকে আছে তদন্ত। যদিও র‌্যাবের পক্ষ থেকে বরাবরের মতো দাবি করা হচ্ছে, মামলার দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়েছে। কিন্তু এখনও এ বিষয়ে কোনো প্রতিবেদন দিতে পারেনি সংস্থাটি।

৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, কিন্তু এক যুগেও পূরণ হয়নি আশ্বাস। উপরন্তু ১০৫ বার পেছানো হয়েছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ।

১২ বছর আগে ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ৫৮/এ/২ বাড়ির ৫ তলার এ-৪ ফ্ল্যাটে নৃশংসভাবে খুন হন সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি। খুনের পর তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের আইনের আওতায় আনার ঘোষণা দিয়েছিলেন। পরের দিন রুনির ভাই নওশের আলী রোমান বাদী হয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন।

সর্বশেষ এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দেওয়ার নির্ধারিত দিন ছিল গত ২৩ জানুয়ারি মঙ্গলবার। কিন্তু র‍্যাবের পক্ষ থেকে ওই দিনও আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়নি। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নতুন তারিখ ধার্য করেছেন।

হত্যা মামলার তদন্ত প্রসঙ্গে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন গণমাধ্যমকে জানান, ‘মামলাটি অত্যন্ত সংবেদনশীল। এটি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। এ জন্য বিদেশের বিভিন্ন সংস্থার সহযোগিতা নিয়েছি। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ডিএনএ ল্যাবের ফলাফলে অজ্ঞাতপরিচয়ের দুজনের ডিএনএ থেকে সন্তোষজনক ফল আসেনি। ফলে এখন পর্যন্ত ওইভাবে মামলার অগ্রগতি নেই।’ তিনি বলেন, তদন্ত চলছে। তদন্তে একজন নিরপরাধ ব্যক্তি যেন দোষী না হয়। প্রকৃত দোষীদের শনাক্ত করতে সময় লাগছে।’

মামলার বাদী ও রুনির ভাই নওশের আলম রোমান বলেন, ‘১২ বছরেও কোনো অগ্রগতি নেই, আর কবে হবে? আমরা আশা ছেড়ে দিয়েছি। শুধু এতটুকু বলতে পারি, তদন্ত কর্মকর্তা এ বিষয়ে কাজ করছেন না। আমাদের সঙ্গেও যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছেন। অথচ প্রতিবছর তারা বলে আসছে, দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে কিছুই নয়। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আদালতও যেখানে বারবার সময় দিচ্ছেন, সেখানে আমাদের আর কী বলার আছে! তবে, জট খোলার চেষ্টা না করলে জট খুলবে না এটাই স্বাভাবিক।’

প্রসঙ্গত, ২০১২ সালে নওশের আলী রোমান বাদী হয়ে মামলা করার পর প্রথমে সেটির তদন্ত করেন শেরেবাংলা নগর থানার একজন কর্মকর্তা। ১৬ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্ত ভার পড়ে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উত্তরের পুলিশ পরিদর্শক মো. রবিউল আলমের ওপর। এর দুই মাস পর হাইকোর্টের আদেশে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় র‌্যাবকে। র‌্যাব মামলার তদন্তে নেমে গ্রেপ্তারকৃত ৮ আসামি, নিহত দুজন এবং স্বজন মিলে ২১ জনের ডিঅক্সিরাইবো নিউক্লিক এসিড (ডিএনএ) নমুনা পরীক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাঠায়। যুক্তরাষ্ট্রের পরীক্ষাগার থেকে ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্টগুলো হাতেও পেয়েছে র‌্যাব। সে রিপোর্ট ও অপরাধচিত্রের প্রতিবেদন (ক্রাইম সিন রিপোর্ট) পর্যালোচনায় দুজনের ডিএনএর পূর্ণাঙ্গ প্রোফাইল পাওয়া গেছে। তবে সন্দেহভাজন খুনি শনাক্ত হয়নি।

Share





Related News

Comments are Closed