ক্ষুধা নিয়ে প্রতিরাতে ঘুমাতে যায় ৮৩ কোটি মানুষ

বৈশাখী নিউজ ডেস্ক : বিশ্বজুড়ে ক্ষুধার মাত্রা বাড়ছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) অনুসারে, ৮২৮ মিলিয়ন মানুষ (৮২ কোটি ৮০ লাখ, এটি বিশ্বের জনসংখ্যার ১০ শতাংশ) প্রতিরাতে ক্ষুধার্ত অবস্থায় ঘুমাতে যায়। এটি আগের বছরের তুলনায় ৪৬ মিলিয়ন বেশি। ক্ষুধার্তদের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশই নারী এবং ৮০ শতাংশ জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বাস করে।
বিশ্বব্যাপী ক্ষুধার মাত্রা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট (একটি অলাভজনক সংস্থা) ২৮ মে বিশ্ব ক্ষুধা দিবস হিসাবে মনোনীত করেছে।
এক দশকের ধারাবাহিক হ্রাসের পর সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্বব্যাপী ক্ষুধার ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ২০১৯ এবং ২০২১ সালের মধ্যে অপুষ্টির শিকার ব্যক্তির সংখ্যা ১৫০ মিলিয়নেরও বেশি বেড়েছে। প্রাথমিকভাবে সংঘাত, জলবায়ু পরিবর্তন, অর্থনৈতিক ধাক্কা এবং করোনাভাইরাস মহামারি এতে ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
বিশ্বব্যাপী খাবারের দামও বেড়েছে। এফএও ফুড প্রাইস ইনডেক্স (এফপিআই) এ দেখা গেছে, ২০১৯ এবং ২০২২ সালের মধ্যে চিনি, মাংস, সিরিয়াল, দুগ্ধ এবং উদ্ভিজ্জ তেলসহ খাদ্যপণ্যের মূল্য বেড়েছে।
এফএও এর ট্রেড অ্যান্ড মার্কেটস বিভাগের অর্থনীতিবিদ মনিকা তোথোভা বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী খাদ্যদ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি দেশ ভেদে ভিন্ন। কারণ দেশগুলো বিভিন্ন নীতি প্রয়োগ করে।’
সর্বশেষ জাতিসংঘের স্টেট অফ ফুড সিকিউরিটি অ্যান্ড নিউট্রিশন ইন দ্য ওয়ার্ল্ড (এসওএফআই) রিপোর্টে দেখা গেছে যে, বিশ্বের বেশিরভাগ অপুষ্টিজনিত জনসংখ্যা এশিয়ায় বাস করে। সেখানে ২০২১ সালে প্রায় ৪২৫ মিলিয়ন (সাড়ে ৪২ কোটি) মানুষ ক্ষুধার্ত হয়েছিল। তবে আফ্রিকাতে ক্ষুধার প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে বেশি। সেখানে একই বছরে ক্ষুধার সমস্যায় ছিল ২৭৮ মিলিয়ন (২৭ কোটি ৮০ লাখ) মানুষ।
খাদ্য সংকটের গ্লোবাল রিপোর্টের ২০২৩ সংস্করণে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে ২৫৮ মিলিয়ন (২৫ কোটি ৮০ লাখ) মানুষ তীব্র তীব্র ক্ষুধার সম্মুখীন হয়েছে।
তোথোভা বলেন, ‘অর্থনৈতিক ধাক্কাগুলোর কারণে বিভিন্ন প্রধান খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। এর ফলে তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা এবং অপুষ্টিগত সমস্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।
২০২২ সালে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ (প্রধান খাদ্যশস্য, তৈলবীজ এবং সারের দুটি বৃহত্তম বিশ্ব উৎপাদক) আন্তর্জাতিক সরবরাহ শৃঙ্খলে বিশাল ব্যাঘাত ঘটা। এর ফলে শস্য, সার এবং জ্বালানির দাম বেড়ে যায়। এর ফলে বিশ্বব্যাপী এফপিআই ২০২২ সালে রেকর্ডের স্তরে পৌঁছয়।
ভবিষ্যতের অবস্থা বর্ণনা করে রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, বিশ্বব্যাপী ক্ষুধা অব্যাহত থাকবে। চরম আবহাওয়া আরও বিধ্বংসী প্রভাব ফেলবে।
দীর্ঘ সময়ের জন্য খাদ্য থেকে বঞ্চিত হওয়ার ফলে ক্ষুধার সৃষ্টি হয়। দীর্ঘস্থায়ী ক্ষুধার কারণে স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে এবং আজীবন শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি হতে পারে, বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে। শক্তি এবং প্রোটিনের ঘাটতি, সেইসঙ্গে অত্যাবশ্যক ভিটামিন এবং খনিজের ঘাটতি এই মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয়।
সূত্র: আল জাজিরা
Related News

মক্কায় প্রচণ্ড ঝড়-বজ্রপাত, ডুবেছে রাস্তা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সৌদি আরবের পবিত্র নগরী মক্কায় ব্যাপক ঝড় ও বৃষ্টির জেরে বহু রাস্তাRead More

পেঁয়াজ রপ্তানি নিষিদ্ধ করল ভারত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে ভারত। শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) দেওয়া এক আদেশে,Read More
Comments are Closed