Main Menu

সৌন্দর্যে ভরপুর সুনামগঞ্জের তাহিরপুর

রোকন মিয়া: দেশের উত্তর-পূর্ব সীমান্তে অবস্থিত সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর। নান্দনিক সৌন্দর্যে ভরপুর এ স্থানটি প্রতিনিয়ত পর্যটকদের হাতছানি দিয়ে ডাকে। পর্যটকদের ভ্রমণকে আনন্দদায়ক ও সার্থক করে তোলে এ উপজেলার প্রাকৃতিক নয়নাভিরাম দৃশ্য। জেলা সদর থেকে মাত্র ৪০ কিলোমিটার দূরে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের কুলঘেঁষা সীমান্ত ও হাওরাঞ্চল উপজেলা তাহিরপুর।
টাঙ্গুয়ার হাওর:
আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত জীববৈচিত্র্যের গুরুত্বপূর্ণ জলাভূমি দেশের জলচর পরিযায়ী পাখির সবচেয়ে বড় বিচরণক্ষেত্র মাছের অভয়াশ্রম টাঙ্গুয়ার হাওর, যা ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ রামসার সাইট হিসেবে পরিচিত। হাওরের উত্তর দিগন্তে মেঘছোঁয়া তিন-চার হাজার ফুট উচ্চতার সবুজ মেঘালয় পাহাড় রয়েছে। এখানে শাপলা ফোঁটা জলে দল বেঁধে নানা প্রজাতির পাখিরা ডুব-সাঁতারে গুগলি শামুক খায় প্রতিনিয়ত। হেমন্তে কোমরে খলই বাঁধা কাঁধে ঠ্যালা জাল নিয়ে দল বেঁধে জলাশয়ের দিকে মৎস্য আহরণ করতে হাঁটা দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায় পর্যটকদের।
দিগন্ত ছোঁয়া তাহিরপুর ও ধর্মপাশা উপজেলার বিস্তীর্ণ ৯ হাজার ৭২৭ হেক্টর এলাকাজুড়ে (নয়কুড়ি কান্দা, ছয়কুড়ি বিল) বিস্তৃত ২৬ বর্গকিলোমিটার আয়তনের ৫২টি বিলের সমন্বয়ে এই টাঙ্গুয়ার হাওর গোধুলির সোনালি মেঘে যেন রোমান্টিক হয়ে ওঠে। হাওরে ভাসতে থাকা সূর্যোদয়ের লোহিত আলোয় হিজল, করচসহ বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষ-গুল্ম অতিথি পাখিদের কলরবে মুগ্ধ করে তোলে। পাখিদের কিচির-মিচির কলতানে সৃষ্টি হওয়া আবহ পাখিপ্রেমীদের সহজেই নিয়ে যায় অন্য এক ভুবনে। এসব পাখির কিচির-মিচির কলধ্বনিতে ঘুম ভাঙে হাওর পাড়ের ৮২টি গ্রামের মানুষের। সব মিলিয়ে নিসর্গের অপূর্ব আকর্ষণ টাঙ্গুয়া। এ যেন পর্যটনের স্বর্গরাজ্য।
উল্লেখ্য, ৯৭ দশমিক ২৯ বর্গ কিলোমিটার দৈঘ্য আয়তনের এই অনন্য জলাভূমিতে ৫২টি বিল ও ১২০টি কান্দা রয়েছে। ১৪১ প্রজাতির মাছ, ২০০ প্রজাতির উদ্ভিদ, ২১৯
প্রজাতির পাখি, ৯৮ প্রজাতির পরিযায়ী পাখি, ১২১ প্রজাতির দেশীয় পাখি, ২২ প্রজাতির পরিযায়ী হাঁস, ১৯ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণি, ২৯ প্রজাতির সরিসৃপ, ১১ প্রজাতির উভচর, অসংখ্য জলজ, স্থলজ ও জীববৈচিত্র্য রয়েছে টাঙ্গুয়ার হাওরে।

Share





Related News

Comments are Closed