Main Menu

প্রতিদিন সাঁতার কেটে অফিসে যান তিনি

বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: যানজট ডিঙিয়ে কিম্বা গরমে বাসে করে ঠিক সময়ে অফিসে গিয়ে পৌঁছানো খুব একটা সহজ কথা নয়।

কিন্তু বেনিয়ামিন ডাভিডের কথা আলাদা। বিশ্বাস হবে কিনা জানি না প্রতিদিন তিনি সাঁতার কেটে অফিসে যান। জার্মানির মিউনিখ শহরে থাকেন তিনি।

তার মতে বাসে গাড়িতে যাওয়ার ঝক্কি ঝামেলা বেশি। তাই তিনি ইসার নদীতে সাঁতার কেটে খুব সহজে ও ঠিক সময়ে পৌঁছে যান অফিসে।

প্রতিদিন সকালে তিনি তার ল্যাপটপ, জামা কাপড় আর জুতা একটি ওয়াটারপ্রুফ ব্যাগের ভেতরে ভরে অফিসের জন্যে নেমে যান নদীতে। তারপর ভাসতে ভাসতে পৌঁছে যান দুই কিলোমিটার দূরের অফিসে।

“নদীর পাশ দিয়ে চলে যাওয়া সড়কটিতে সকালে প্রচুর গাড়ি থাকে। ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়া খুবই ঝামেলার,” বলেন তিনি।

তিনি বলেন, “সেকারণে আমি বাসে বা গাড়িতে করে অফিসে যাই না। যাই আমার শহরের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীতে সাঁতার কেটে।”

“তার চেয়ে সাঁতার কেটে যাওয়াই ভালো। কারণ আমি খুব দ্রুত ও টেনশন ছাড়াই অফিসে পৌঁছে যেতে পারি।”

গ্রীষ্মকালের সময় প্রতিদিনই সাঁতার কেটে অফিসে যান। বিশেষ করে ওই তিন মাস। সেসময় তিনি সাঁতার কেটে বাড়িতেও ফেরেন। শুধু তাই নয়, শীতের সময়েও তিনি কখনো কখনো সাঁতরাতে সাঁতরাতে অফিসে চলে যান। কিন্তু সবসময় নয়।

অফিসে যাওয়ার জন্যে তার আছে বিশেষ একটি ব্যাগ। তার ভেতরে থাকে তোয়ালে ও কাপড় চোপড়। শুধু তাই নয়, সাঁতার কাটতেও এই ব্যাগটি তাকে সাহায্য করে। এটি ফুলে পিঠের সাথে লেগে থাকায় পানিতে ভেসে থাকতে সুবিধা হয়।

এভাবে অফিসে যাওয়া শুরু করার আগে তার মনে একটাই প্রশ্ন ছিলো যে শরীর না ভিজিয়ে কিভাবে তিনি সেখানে যেতে পারেন। এটাই ছিলো তার কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তিনি জানান, সাঁতরে অফিসে যাওয়ার পথে তিনি পায়ে রাবারের স্যান্ডেল পরেন। এই স্যান্ডেল জোড়া তাকে নদীতে পরে থাকা অনেক কিছু থেকে রক্ষা করে।

তবে প্রতিদিন বাড়ি থেকে বের হয়ে যাওয়ার আগে যে কাজটা তিনি অবশ্যই করেন সেটা হলো নদীতে পানির উচ্চতা, তাপমাত্রা, স্রোতের গতি এসব তিনি ইন্টারনেটে পরীক্ষা করে নেন।

তিনি জানান, প্রতিদিনই তিনি যখন অফিসে যান তখন লোকজন রাস্তার দু’পাশে কিম্বা ব্রিজের উপর দাঁড়িয়ে তাকে দেখেন এবং কেউ কেউ হাসাহাসিও করেন। অনেকে তাকে দেখে সাঁতার কাটার ব্যাপারে উৎসাহী হয়ে উঠেছেন। নদীটিকে জলপথ হিসেবে ব্যবহার করার দেড়শো বছর পূর্তিতে তার মাথায় এভাবে অফিসে যাওয়ার ধারণাটি আসে।

এরপর তার অনেক সহকর্মীও তার সাথে সাঁতার কেটেছেন দেখার জন্যে যে এভাবে অফিসে যেতে কেমন লাগতে পারে।

তিনি জানান, রোম ও ভিয়েনাতে যাওয়ার জন্যে এই ইসার নদী একসময় ছিলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ জলপথ। লোকজন নৌকায় করে চলাচল করতো। কিন্তু গত একশো বছরে এসব কিছু হারিয়ে গেছে।

“এখন আর কেউ ইসার নদীকে ব্যবহার করে না। তাই আমি নিজেই প্রতিদিন ঝাঁপিয়ে পড়ি। এবং পৌঁছে যাই অফিসে। আমি অবাক হবো না যদি আগামী বছরে দেখি আরো বহু মানুষ এই নদীতে সাঁতার কেটেই অফিসে যাচ্ছেন।”
সূত্র: বিবিসি বাংলা

Share





Related News

Comments are Closed