Main Menu

সিলেটে স্বামীর নির্যাতনে অন্তস্বত্ত্বা স্ত্রীর মৃত্যু

বৈশাখী নিউজ ২৪ ডটকম : পৃথিবীর আলো দেখা হল না গর্ভের সন্তানের। এর আগেই যৌতুকলোভী পাষন্ড স্বামী কেড়ে নিল গর্ভধারিনী মায়ের প্রাণ। ঘটনাটি ঘটেছে ২০ জুলাই সিলেট এয়ারপোর্ট থানাধীন ৪৭/৪ জালালাবাদ আবাসিক এলাকার শুক্কুর মিয়ার কলোনীতে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হলেও আজোবধি গ্রেফতার হয়নি ঘাতক স্বামী ও তার স্বজনরা।
জানা গেছে, ২০১৫ সালের ডিসেস্বরে ইসলামী শরিয়াহ ও প্রচলিত আইন অনুযায়ী বিয়ে হয় হারিছ মিয়া (২৭) ও রাশেদার । বিয়ের পর থেকে শুরু হয় রাশেদার সাথে স্বামী হারিছ মিয়ার যৌতুকের হিসেব-নিকেশ। চলতে থাকে রাশেদার উপর শারিরীক ও মানসিকভাবে নির্যাতনের স্টীম রোলার। সেই অবস্থায়ই অন্তঃসত্ত¡া হয়ে পড়ে রাশেদা। নবাগত সন্তান ও সংসার টিকেয়ে রাখার কথা চিন্তা করে বিভিন্ন সময় নিজের হত-দরিদ্র ভাইয়ের কাছ থেকে নগদ ২২ হাজার টাকা এনে দেয় তার স্বামী হারিছকে। এতেও ক্ষান্ত হয়নি যৌতুকলোভী স্বামী হারিছ মিয়া। নির্যাতনের মাত্রা ক্রমেই বাড়তে থাকে রাশেদার উপর। গত রমজান মাসে ৪৭/৪ জালালাবাদ আবাসিক এলাকার শুক্কুর মিয়ার কলোনীতে বাসা ভাড়া নেয় তারা। ঘাতক হারিছ ঐ কলোনীতে নির্যাতন চালায় রাশেদার উপর।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২০ জুলাই যৌতুকের জন্য আবারো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে হারিছ। গভীর রাতে নির্যাতন চালায় রাশেদার উপর। রড ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে রাশেদার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে ও মাথায় আঘাত করে সে। এতে রাশেদা গুরুতর আহত হলে স্বামী হারিছ মিয়া ও ভাই শফিক মিয়া ২১ জুলাই ভোর রাতে রাশেদাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। কর্তব্যরত চিকিৎসক রাশেদার অবস্থা আশংকাজনক জানালে হাসপাতাল থেকে সটকে পড়ে স্বামী হারিছ ও তার ভাই শফিক । এ অবস্থাায় ভোরে মৃত্যুকোলে ঢলে পড়ে রাশেদা । খবর পেয়ে পুলিশ লাশের সুরতেহাল করে ময়না তদন্তের জন্য ওসমানী মেডিকেল করেজ মর্গে প্রেরন করে। সুরতহাল রিপোর্টে রাশেদার মাথার ডানপাশে গুরুতর জখম সহ ১২টি সেলাই দেখা যায়। তখনো সেলাই ভেদ করে রক্ত ও মগজ বের হচ্ছিল মাথার ভেতর থেকে। খবর পেয়ে রাশেদার মা ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও মর্গে যান এবং ময়না তদন্ত শেষে লাশ গ্রহণ করেন। পরে রাশেদার পিতা মোঃ আমির আলী, বাদী হয়ে ২১ জুলাই সিলেট এয়ারপোট থানায় নারী ও শিশু নিযাতন দমন আইনে একটি মামলা (নং-১৬(৭)১৬) করেন। মামলা হলেও এখন পর্যন্ত ঘাতক স্বামী হারিছকে গ্রেফতার করতে পারেনি এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ। রাশেদার পরিবার উপযুক্ত বিচার পাওয়ার জন্য প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

Share





Related News

Comments are Closed