Main Menu

বর্নাঢ্য আয়োজনে পালিত হলো লাউতা উচ্চ বিদ্যালয়ে পূণর্মিলনী

এম.হাসানুল হক উজ্জ্বল, বিয়ানীবাজার থেকে : এই তুই আমারে চিনরেনি আমি সালাম বা। একলগে লেখাপড়া করেছি। এখন আমি— থাকি। এ রকম একে অপরকে পরিচয় দিচ্ছেন। অনেক দিন দেখা নেই। যান্ত্রিক জীবনে কর্মব্যস্ততা ও প্রবাস জীবন স্কুল জীবনের সহপাঠিদের অনেক দুরে রেখেছিল। কিন্তুু ১৪৫ বছর পুর্তি অনুষ্টান আবারো সেই অতিতে ফিরিয়ে নিয়ে গেলো বিয়ানীবাজার উপজেলার লাউতা উচ্চ বিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থীকে। পুরনো বন্ধুর পরিচয় পাওয়ার পাশাপাশি তাকে কাছে পাওয়ার অনুভ’তি যেন অন্য রকম। একে অপরকে জড়িয়ে ধরে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন অনেকে। ফেলে আসা সোনালী দিনের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে পুরনো মধুর স্মৃতিকে রুমান্তন করতে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনায় ও আনন্দঘন পরিবেশে বিয়ানীবাজার উপজেলার লাউতা উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রবাসী প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে পূণর্মিলনী অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে।
শনিবার বিদ্যালয় সংলগ্ন মাঠে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের এক মিলন মেলায় পরিণত হয়। অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে বিদ্যালয়টিকে সাজানো হয়েছে রঙিন আলপনায়। পুণর্মিনীর ব্যানার, ফেস্টুন আর প্রকৃতি থেকে নেয়া সবুজ রঙের টি-শার্ট, লাল রঙের টুপি পরে প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থী মিলিয়ে প্রায় হাজারেরও বেশী শিক্ষার্থী সকাল ১১টায় অংশ নেয় পূণর্মিলনী অনুষ্ঠানের প্রথম পর্ব র‌্যালিতে। র‌্যালিটি বিদ্যালয় এলাকার চতুর্দিক ঘুরে এসে পুণরায় সমাবেশস্থলে শেষ হয়। সকালে আলোচনা সভার শুরুতে পূণর্মিলনী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের অন্যতম উদ্যোক্তা বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ব্রিটেন প্রবাসী চলচ্চিত্র নির্মাতা এম এ সালাম।
প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ লাউতা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রবাসী প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে আয়োজিত পূণর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ গোলাম শাহি আলম। এ সময় প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, আমাদের আগামীর সুন্দর সমাজ বিনির্মাণের জন্য শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। কেবলমাত্র পুথিগত শিক্ষার মধ্যেই আমাদেরকে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না। আমাদের সমাজকে আর অন্ধকারের ফিরে তাকালে হবে না। তাদেরকে শিক্ষার আলো দিয়ে সামনের দিকে নিয়ে যেতে হবে।
লাউতা উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আবদুল আলীমের সভাপতিত্বে ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী নূর উদ্দিন ও প্রবাসী প্রাক্তন শিক্ষার্থী নূরে আলম রব্বানীর প্রাণবন্ত সঞ্চালনায় আয়োজিত পূণর্মিলনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিয়ানীবাজার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান খান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুঃ আসাদুজ্জামান, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রার মোঃ বদরুল ইসলাম শোয়েব, শিক্ষামন্ত্রীর একান্ত সহকারী সচিব দেওয়ান মাকসুদুল ইসলাম আউয়াল, বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক কাজী মতিউর রহমান, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কামান্ডার এম এ কাদির, লাউতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ জলিল, প্রবাসী মোঃ জহুরুল হোসেন চৌধুরী, হাজি মোঃ আবুল লেইছ, কমিউনিটি নেতা মাসুম আহমদ প্রমুখ।
পূণর্মিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিদ্যালয়ের প্রবাসী শিক্ষার্থীরা। তাদেরই একজন নূরে আলম রব্বানী। তিনি বলেন, বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের আবারও বিদ্যালয়ে ফিরিয়ে আনতেই তারা এ পূণর্মিনীর আয়োজন করেন। প্রায় অর্ধশত ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দেশে এসেছেন।
বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ব্যারিষ্টার জুয়েল আহমদের স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে শুরু হওয়া পূণর্মিলনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী মাহবুবুল আলম আলমগীর, পরিচালনা পর্ষদের সদস্য আব্দুল আহাদ, এম এ মান্নান ও আবদুস ছবুর প্রমুখ।
পূণর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রবাসী নূরে আলম রব্বানী’র সম্পাদনায় ‘কালের ধ্বনি’ স্মারকগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন অতিথিরা। বিকেলে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এতে স্থানীয় শিল্পিবৃন্দের পাশাপাশি গান পরিবেশন করেন দেশের খ্যাতনামা শিল্পী মনির খান ও গামছা পলাশ।

Share





Related News

Comments are Closed