Main Menu

কমলগঞ্জে তিন ধর্মের সমাধিস্থল একই স্থানে

বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য উদাহরণ মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জের পাত্রখোলা চা বাগানে। পাত্রখোলা চা বাগানের অবস্থান কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকায়। এ চা বাগানে একই স্থানে রয়েছে মুসলমানদের কবর, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের শ্মশান ও খ্রিস্টানদের সমাধি। এ যেন ধর্মীয় সম্প্রীতির এক অনন্য নিদর্শন।

স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, দীর্ঘদিন ধরে একইস্থানে কবরস্থান, শ্মশান ও সমাধি হলেও তিন ধর্মের মানুষ সম্প্রীতির বন্ধনে থেকে নিজ নিজ ধর্ম পালন করে আসছেন। এ নিয়ে কখনও কোন বিরোধ দেখা দেয়নি আমাদের মাঝে এমনকি কোনো বাক-বিতণ্ডা পর্যন্ত হয়নি।

১৮৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় পাত্রখোলা চা বাগান। শুরু থেকেই এখানে পাশাপাশি বসবাস মুসলিম, হিন্দু ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী জনগোষ্ঠির। পাত্রখোলা চা বাগানে মুসলমানের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৪ হাজার, হিন্দু প্রায় ৮ হাজার ও খ্রিস্টান মতাদর্শীদের সংখ্যা প্রায় তিন হাজার। তবে দীর্ঘদিন থেকে পাশাপাশি বসবাস করলেও ধর্ম নিয়ে এখানে কোনো হানাহানি ও মতবিরোধ নেই। চা বাগান কর্তৃপক্ষ থেকে প্রায় ৪.৯৪ একর (১৫ বিঘা) জমি বরাদ্দ করা হয় প্রধান তিনটি ধর্মের অনুসারীদের সমাধির জন্য। সবাই নিজ নিজ ধর্মীয় আচার মেনে মৃতদের সৎকার বা সমাধিস্থ করেন।

এলাকাবাসী জানান, পারস্পরিক সহযোগিতায় ধর্মীয় আচার পালন করে আসছেন এখানকার সকল ধর্মের মানুষ। একই স্থানে পাশাপাশি তিন ধর্মের সমাধিস্থল হলেও কখনো কোন মতবিরোধ হয় নি। সব ধর্মের মানুষের মাঝে সৌহার্দের দৃষ্টান্ত হিসেবেই এই সমাধিস্থলটি গড়ে উঠেছে।

সম্প্রীতির এই স্থানটি দেখতে বিভিন্ন অঞ্চলের দর্শনার্থীরা ছুটে আসেন এখানে। দেশীয় বিভিন্ন গণমাধ্যম ছাড়াও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রচারিত হয় সম্প্রীতির এই নিদর্শন। পাত্রখোলা জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আব্দুল আজিজ, সার্বজনীন মন্দিরের পুরোহিত রাজেশ প্রসাদ শর্মা ও পাত্রখোলা চা বাগান গির্জার পরিচালক ধর্মযাজক যোসেফ বিশ্বাস জানান, এখানে প্রথম যখন চা বাগান করা হয় সে সময় তিন ধর্মের মুরব্বিরা সবার জন্য একটি দৃষ্টান্ত রেখে যেতে চেয়েছেন। পরে প্রজন্মের কাছে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির নিদর্শনস্বরূপ তারা এ সমাধি করে গেছেন। এখানে তিন ধর্মের অনুসারীদেরই সমান সুযোগ দিয়ে নিজ নিজ ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী মৃত ব্যক্তিদের সৎকার অনুষ্ঠান পালন করা হয়।

পাত্রখোলা চা বাগানের ব্যবস্থাপক শফিকুর রহমান মুন্না বলেন, সব ধর্মের মানুষের মাঝে সৌহার্দ্যের দৃষ্টান্ত হিসেবেই সমাধিস্থলটি গড়ে উঠেছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে এই চা বাগানে।

Share





Related News

Comments are Closed