Main Menu

এই দিন থাকবে না, পরিবর্তন হবেই : আমির খসরু

বৈশাখী নিউজ ডেস্ক: বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, কোন অপরাধ নয়, আজীবন ক্ষমতায় থাকার প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করতেই তিন বারের সাবেক সফল প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে আর সিলেটের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা ইলিয়াস আলীকে গুম করা হয়েছে। জিয়া পরিবারের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়েই দেশনায়ক তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ফরমায়েসী সাজা দেয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন যারা গুম নামক অপরাজনীতির শিকার হয়েছেন তাদের নাম বিএনপির খাতায় আজীবন লেখা থাকবে। গুমকৃত পরিবারের লোকজন যখন আমাদের জিজ্ঞেস করে আমরা প্রত্যাশা না দোয়া করবো। তখন তাদের জবাব দেয়ার ভাষা খুজে পাইনা। আমাদেরকে দুর্বল বলা হয়। কিন্তু আমরা এত খুন-গুম, হামলা-মামলা, গ্রেফতার-নির্যাতন, জুলুম-নিপীড়ন স্বত্তেও এখন পর্যন্ত ঠিকে আছি। আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আছে ক্ষমতার মোহে আর পুলিশের পাহারায়। এই দিন থাকবেনা পরিবর্তন হবেই। আপোষহীন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করেই এদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবোই। এজন্য দরকার একটি গণ আন্দোলন। এই আন্দোলনকে গ্রামে-গঞ্জে সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে হবে।

সোমবার (২৯ এপ্রিল) সিলেট জেলা বিএনপি আয়োজিত “কারান্তরীন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, গুম নামক অপরাজনীতির ভয়াবহতা ও অবরদ্ধ গণতন্ত্র” শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথা বলেন।

নগরীর মিরের ময়দানস্থ একটি অভিজাত রেষ্টুরেন্টের হলরুমে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কেন্দ্রীয় নেতা, নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক ও ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও বিশিষ্ট মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ব্যারিষ্টার রুমিন ফারহানা।

বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক সফল সভাপতি ও সাবেক সফল সংসদ সদস্য জননেতা এম ইলিয়াস আলী, ছাত্রদল নেতা ইফতেখার আহমদ দিনার, জুনেদ আহমদ ও গাড়ী চালক আনসার আলী গুমের ৭ বছর অতিবাহিত হওয়ায় সিলেট জেলা বিএনপির পূর্বঘোষিত তিন দিনের কর্মসুচীর অংশ হিসেবে উক্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল কাহির চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বিএনপির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ সহ বিভিন্ন পর্যায়ের বিপুল সংখ্যক সাংবাদিক, পেশাজীবি নেতৃবৃন্দ সহ দলীয় নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান বক্তার বক্তব্যে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে এমন নিষ্টুর, হৃদয়হীন, ক্ষমতাপিপাসু সরকার জাতি আর কখনো দেখেনি। মানুষের ভোটাধিকার হরণ করতে যাদের লজ্জাবোধ নেই তাদের মুখে উন্নয়ন আর মানবতার ভুলি শুনলে হাসি পায়। ব্যর্থতা আমাদেরও আছে ৩০ ডিসেম্বরের ভোট চুরির নির্বাচনের পর লাগাতার হরতাল অবরোধ পালন করলে এই ভোট ডাকাত সরকার শপথ নিতে পারতো না। আপনাদেরকে মনে রাখতে হবে আমরা একটা কঠিন শক্তির বিরুদ্ধে লড়ছি। কারণ এরা শকুনের চাইতেও খারাপ। সরকার বলছে উন্নয়ন উন্নয়ন। আমরা দেখছি কি, উন্নয়ন নামে মেঘা প্রজেক্ট আর মেঘা প্রজেক্টের আড়ালে চলছে মেঘা লুটপাট। শুধু লুটপাট বললে কম হবে রীতিমত ডাকাতি চলছে। গুমকৃত পরিবার গুলোর সদস্যরা যখন প্রশ্ন করে আমরা কি দোয়া করবো। ফিরে আসার নিশ্চয়তা থাকলে সুস্থতার আর মৃত হলে মাগফেরাতের জন্য মোনাজাত করবো। কিন্তু এমন কঠিন প্রশ্নের জবাব আমার রাষ্ট্র সরকার দিতে পারেনা। আর পারবেও না। কারণ তারা আদর্শিক মোকাবেলায় ব্যর্থ হয়েছে বলেই গুম ও ক্ষমতা দখলের রাজনীতি করছে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ব্যারিষ্টার রুমিন ফারহানা বলেন, বিএনপি করতে কলিজা লাগে, সাহস লাগে আর দেশপ্রেম লাগে। আর এই শক্তি সাহস আমরা পাই আমাদের কারান্তরীণ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কাছ থেকেই। মামলা সংশ্লিষ্ট কাজে সম্পৃক্ত থাকায় গণতন্ত্রের মায়ের কাছাকাছি যাওয়ার সুযোগ হয়। যখন তার ঈমানদীপ্ত ইস্পাত কঠিন সাহস ও আপোষহীনতা দেখি তখন গর্বে বুক ভরে যায়। খালেদা জিয়ার ইতিহাসে আপোষকামীতা বলে কোন শব্দ নেই। কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষমতালিপ্সু নেত্রীর ইতিহাসই হচ্ছে আপোষকামীতার। যা ১/১১ এর ফখর-মঈন সরকারের শাসনামালে জাতি দেখতে পেয়েছে। সবকটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়ে দেশে একদলীয় নয় এক ব্যক্তির শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার নীল নকশা বাস্থবায়নের মহোৎসব চলছে। রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংক সহ বেসরকারী ব্যাংক বীমা সমুহে লুটপাটের কথা শুনলে গা শিওরে উঠে। শুনেছি অর্থমন্ত্রী বলেছেন ঋণখেলাপীদের নাকি ঋণ মওকুফ বরে সাধারণ ক্ষমা ঘোষনা করবেন। কিন্তু তিনি কার টাকা মওকুফ করে দিবেন। এই টাকা জণগনের টাকা। এই টাকা মওকুফ করার সাধ্য কোন সরকার বা মন্ত্রীর নেই। দেশপ্রেম ও জিয়া পরিবারের প্রতি বিশ্বস্ত থাকায় সিলেটের কোটি জনতার হৃদয়ের স্পন্দন জননেতা এম ইলিয়াস আলীকে গুম করা হয়েছে। সিলেটের ছাত্রদল নেতা ইফতেখার আহমদ দিনার, জুনেদ আহমদ ও গাড়ী চালক আনসার আলী সহ শত শত নেতাকর্মীকে গুম করে সরকার বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিল। কিন্তু বিএনপি নিশ্চিহ্ন হওয়ার দল নয়। দেশপ্রেম, গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বিএনপি দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে। নেত্রীর মুক্তির জন্য একটা আন্দোলন চাই আন্দোলন। আর সেই আন্দোলনের শুভ সুচনা হবে পবিত্র সিলেটের মাটি থেকে। নেত্রীর মুক্তি ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হলে জননেতা এম ইলিয়াস আলী সহ গুমকৃত সকল নেতাকর্মীদের অক্ষত অবস্থায় ফিরিয়ে আনার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে।

আলোচনা সভায় আবেগঘন বক্তব্য রাখেন, নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম. ইলিয়াস আলীর বড় ছেলে ব্যারিষ্টার আবরার ইলিয়াস, ইফতেখার আহমদ দিনারের বাবা ডাঃ মঈনুদ্দিন, জুনেদ আহমদের ছোট ভাই হাসান মঈনুদ্দিন আহমদ ও আনসার আলীর স্ত্রী মুক্তা বেগম। সভায় প্রখ্যাত সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ ও বিএনপির অন্যতম শীর্ষ নেতা সাবেক মন্ত্রী ব্যারিষ্টার আমিনুল ইসলামের মৃত্যূতে শোক প্রকাশ করে তাদের মাগফেরাত কামনা করা হয়।

জেলা ওলামা দলের সভাপতি মুফতী মাওলানা সাদিকুর রহমানের পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে সুচীত সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় সিলেট বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক এমপি কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক এমপি আলহাজ্ব শফি আহমদ চৌধুরী, মহিলা দলের কেন্দ্রীয় সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস ও সাধারণ সম্পাদিকা সুলতানা আহমেদ, সম্মিলিত পেশাজীবি পরিষদ সিলেট জেলা সভাপতি ডাঃ শামীমুর রহমান, সিলেট মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম জালালী পংকী।

Share





Related News

Comments are Closed