Main Menu

ইবিতে তিন দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা শুরু

শাহাব উদ্দীন ওয়াসিম, ইবি প্রতিনিধি: বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) শুরু হয়েছে তিনদিন ব্যাপী বৈশাখী মেলা। রবিবার সকাল সাড়ে ৯টায় মঙ্গল শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে শুরু হয় পহেলা বৈশাখ ১৪২৬ উদ্যাপন।

জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মো: হারুন-উর-রশিদ আসকারী নেতৃত্বে সকালে মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হয়। এসময় প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. মো: শাহিনুর রহমান, ট্রেজারার প্রফেসর ড. মো: সেলিম তোহা, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এস এম আব্দুল লতিফ, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. নাসিম বানু, সিন্ডিকেট সদস্য প্রফেসর ড. মো: মাহবুবর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও শোভাযাত্রায় বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় সভাপতি, প্রভোস্ট, প্রক্টর, ছাত্র-উপদেষ্টা, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা অংশ নেন। শোভাযাত্রায় প্লাকার্ড, বেলুন, ফেস্টুন, নব দম্পতি, ঘোড়ার গাড়ি, গরু-মহিষের গাড়ি, স্বাধীনতা যুদ্ধের সাহসি সৌনিক, কৃষক, শ্রমিক, জেলে, জমিদার, জল্লাদ, ঘটক, বাউল, ফকিরসহ নানা পেশাজীবির মানুষের সাজে সেজে শিক্ষার্থীদের অংশ নিতে দেখা যায়।

মঙ্গল শোভাযাত্রাটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে মেলা প্রাঙ্গণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানস্থল বাংলা মঞ্চে গিয়ে শেষ হয়। এসময় মেলা প্রাঙ্গনে ভিসি প্রফেসর ড. রাশিদ আসকারী তিন দিনব্যাপী মেলার উদ্বোধন করেন।

বাংলা মঞ্চে বৈশাখী মেলা-১৪২৬ উদযাপন কমিটির আহবায়ক ও পরিবহন প্রশাসক প্রফেসর ড. রেজওয়ানুল ইসলামের সভাপতিত্বে বৈশাখী আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে ভিসি ড. রাশিদ আসকারী উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে প্রো-ভিসি ড. শাহিনুর রহমান ও ট্রেজারার ড. সেলিম তোহা উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন ল এন্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রভাষক বনানী আফরিন।

আলোচনা সভায় অন্যাদের মধ্যে ছাএ-উপদেষ্টা প্রফেসর ড. পরেশ চন্দ্র বর্মণ, প্রক্টও (ভারঃ) ড. আনিচুর রহমান, রেজিস্ট্রার (ভারঃ) এস.এম আব্দুল লতিফ, প্রফেসর ড. মোঃ জাকারিয়া রহমান, প্রফেসর ড. মোঃ মাহবুবর রহমান, প্রফেসর ড. আহসানুল হক আম্বিয়া, প্রফেসর ড. মাহবুবল আরফিন, প্রফেসর ড. মেহের আলী, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) এ.কে.আজাদ লাবলু, কর্মকর্তা সমিতির নেতৃবৃন্দ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বস্তরের শিক্ষক , কর্মকর্তা, কর্মচারী ও ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ট্রেজারার প্রফেসর ড. সেলিম তোহা বলেন, ‘বাঙালীরা সব সময় সংস্কৃতির শিকড়ের সন্ধান করে।যেমন আমি ছোটবেলায় নানীর কোলে উঠে তার নতুন শাড়ির ঘ্রাণ পেতাম। যা আজ ও আমি খুজে ফিরি। আমরা অসাম্প্রদায়িক ও গ্রাম বাংলার ধান মাড়াই চেতনায় বিশ্বাসী।আমরা বাস করি সুন্দরকে ঘিরে। তাই সকল অসুন্দরকে ভেদ করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে এই হোক আমাদের পহেলা বৈশাখের অঙ্গীকার।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. শাহিনুর রহমান বলেন, ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার” প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই কথাটি আজ সার্বজনীন বাঙালীর সব উৎসবের জন্য। পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান সকল ধর্ম, বর্ণ ও পেশার মানুষকে আজ এক সেতুবন্ধনে আবদ্ধ করেছে। তাই এটা বাঙালীয়ানার বন্ধন, প্রেমের বন্ধন, নিজেকে নতুন করে সাজাবার বন্ধন। আজকে বৈশাখী উৎসব পালনে শহর বা গ্রাম বলে কিছু নেই বরং সকলেই যার যার অবস্থান হতে প্রাণের উৎসবে, প্রাণের মেলায় মিলিত হচ্ছে।’

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভিসি ড. রাশিদ আসকারী বলেন, সংস্কৃতিক হচ্ছে বেগবান যা চর্চার বিষয়। আর এই চর্চাটি হয় পহেলা বৈশাখের সার্বজনীন উৎসব বর্ষবরনের মধ্যে দিয়ে। পহেলা বৈশাখ হচ্ছে বাঙালী সংস্কৃতির প্রাণের উৎসব যেখানে নেই কোন ভেদাভেদ ও বিভাজন। সকল ধর্ম,বর্ণ, পেশার মানুষ এই দিনে সম্প্রতির বন্ধনে মেতে উঠে।

তিনি আরো বলেন, সমাজ ও সভ্যতার বিনাশ সৃষ্ঠিকারী অপ-সংস্কৃতির কারনে যেন আমাদের দেশীয় সংস্কৃতির চরম ক্ষতি সাধন না হয় সেদিকটিতে আমাদের সকলকেই খেয়াল রাখতে হবে। কোন অপশক্তি ও অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসীরা যেন মাথা তুলতে না পারে। তাদেরকে আমরা অসাম্প্রদায়িক সাংস্কৃতিক চেতনায় রুখে দেবো।

উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল ও বিভাগ এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের আয়োজনে তিনদিন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বেলা ৩টা হতে রাত ৮টা পর্যন্ত চলবে। পহেলা বৈশাখে কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠান চলাকালে কোন বিভাগ, হল ও সাংন্কৃতিক সংগঠনকে অনুষ্ঠান না করার জন্য অনুরোধ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

Share





Related News

Comments are Closed