Main Menu

কোম্পানীগঞ্জে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ৫০

কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি: সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে পূর্ব বিরোধ ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে একই গ্রামের দুই পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন।

শুক্রবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার ইসলামপুর গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে গুরুতর আহত ১৩ জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদের কোম্পানীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

আহতরা হলেন- সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ ইয়াকুব আলী ও তার ভাই উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহবায়ক ইকবাল হোসেন, কোম্পানীগঞ্জ ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও কোম্পানীগঞ্জ প্রেসক্লাবের অফিস সম্পাদক সোহেল রানা, ইসলামপুর গ্রামের মোশাররফ হোসেন (৩৫), সফিকুল ইসলাম (৩৭), মনির মিয়া (২৮), আনোয়ার হোসেন (১৯), ইব্রাহিম (৪৫), সাইফুর রহমান (২৬), রফিক (২৩), আব্দুল হাকিম (৩৫), আবুল হোসাইন (৫০), আবু হানিফ (৪০), হোছন আলী (৩২), নাজমুল (২৬), হাবিবুর রহমান (১৮), আমির হোসেন (৩৫), রফিক মিয়া (২০), আশরাফ (২২), আবু বকর (৬০), হাছন আলী (৩৫), শরিফ (১২), আবু হাশেম (৪০), মাহমুদা (৫০), জাফর (২৫), নান্নু মিয়া (৫০), আরিফ (১৫), শাহ আলম (৪০), আব্দুল্লাহ (৩০), মোস্তফা (২৫), শহিদ (৪০), বিল্লাত হোসেন (১৯), বশির মিয়া (৩৪), আশরাফুল (২১), সাজেদা (৫০), ইয়ামিন (২), আকির (৬), কবির (৩০) ও আলী আহমদ (৪৫), শিলেরভাঙ্গা গ্রামের গোলাম কিবরিয়া (৩৭), সাদেক মিয়া (৫৫), কাউছার (৪০), বুরহান (২৫), জিলানি (৩৫), ইব্রাহিম (২৮) ও জীবন মিয়া (২৭), টুকেরগাঁও গ্রামের সোহাগ (২৪), শরিফ (১৬) ও মিজান (২২), ঢালারপাড় গ্রামের মাসুক চৌধুরী (৩৫) ও যুবরাজ (১০)সহ ৫০ জন। অন্যদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।

একটি সূত্র জানায়, সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ ৪৮ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ইসলামপুর গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ইয়াকুব আলী ও মুক্তিযোদ্ধা আবু তাহের মেম্বার পক্ষের লোকজনের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। এর জের ধরে এবং আধিপত্য বিস্তার নিয়ে শুক্রবার জুমআ’র নামাজের পর উভয়পক্ষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় এলাকায় এক ভীতিকর পরিবেশ তৈরি হয়। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মধ্য দিয়ে ঘন্টাব্যাপী চলা এ সংঘর্ষ একপর্যায়ে রূপ নেয় রণক্ষেত্রে। পরে কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ কয়েক দফা চেষ্টা চালালে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধা রাতে টুকেরবাজারে সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ইয়াকুব আলীর পক্ষের জাকির হোসেন ও মুক্তিযোদ্ধা আবু তাহের মেম্বারের ভাতিজা মনির হোসেনের মধ্যে পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরে কথা কাটাকাটি হয়। এর কিছুক্ষণ পর মেম্বারের ভাগ্নে কাজী মনিরকে প্রতিপক্ষের কয়েকজন মিলে মারধর করেন।

এ ব্যাপারে কাজী মনিরের ভাই কাজী নজরুল ইসলাম জানান, ঘটনার সময় তার ভাই তাদের নিজস্ব ফার্মেসীতে অবস্থান করছিল।

তবে, বিষয়টি অস্বীকার করে মোঃ ইয়াকুব আলী জানান, ফার্মেসীতে হামলার কোন ঘটনা ঘটেনি। বরং তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে মুক্তিযোদ্ধা আবু তাহেরের লোকজন আমার ভাতিজা জাকির হোসেনকে মারধর করে। পরে উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল বাছির বিষয়টি সালিশ বিচারে নিষ্পত্তির উদ্যোগ নিলে আমরা মেনে নেই। কিন্তু প্রতিপক্ষ আমাদেরকে টুকেরবাজারে সংঘাতের জন্য আমন্ত্রণ জানায়। শুক্রবার আমরা টুকেরবাজারে গেলেও তারা যায়নি। জুমআর নামাজের পর আমার ছেলে জাফর তার দুই বছরের ছেলে ইয়ামিন ও আকির হোসেনকে নিয়ে মোটরবাইকে করে টুকেরবাজার যাচ্ছিল। পথিমধ্যে তাদের ওপর হামলা চালায় প্রতিপক্ষের লোকজন। এ হামলায় দুই বছরের শিশু ইয়ামিন গুরুতর আহত হয়েছে। তিনি জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে ৫০-৬০ জন লোক তাদের ওপর আক্রমণ করলে তাদের বেশ কয়েকজন লোক আহত হন। এসময় তিনি নিজেও আহত হয়েছেন বলে জানান।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) জসীম উদ্দিন জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত রয়েছে। পুনরায় সংঘর্ষ এড়াতে ইসলামপুর গ্রামে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে উল্লেখ করে ওসি জানান, এ ঘটনায় এখনো কোনো পক্ষ থানায় অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Share





Related News

Comments are Closed