Main Menu

ছয় দফা দাবিতে সিলেটে আটাবের গণঅবস্থান

বৈশাখী নিউজ ২৪ ডটকম: সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে সরাসরি ফ্লাইট চালু করা, যাত্রী হয়রানী বন্ধ এবং সিলেটি প্রবাসীদের আসন সংরক্ষণসহ ৬ দফা দাবিতে কর্মবিরতি ও গণঅবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে এসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ আটাব।

সোমবার বেলা ১১টা থেকে সিলেট নগরীর মজুমদারীস্থ বিমান অফিসের সম্মূখে দুই ঘন্টাব্যাপী এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিভিন্ন সিদ্ধান্তের কারণে সিলেটের অঞ্চলের ট্রাভেল এজেন্টসহ প্রবাসী, ওমরা ও হজ্জপালনকারীরা হয়রানি ও আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক ঘোষণার পরও বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে সিলেট থেকে সরাসরি বহিঃবিশ্বে ফ্লাইট যাতায়াত ও বিদেশি এয়ারলাইন্স আসা-যাওয়া বন্ধ রাখা হয়েছে।

বক্তারা বলেন, সিলেটের ওমরা ও হজ্জ পালনকারীরা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে সিলেট থেকে যাতায়াত করতে চান কিন্তু তাদের জন্য আসন সংকট তৈরি করে রাখা হয়। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটে কমন ভাড়া নির্দিষ্ট থাকলেও সিলেটীদের জন্য অতিরিক্ত ভাড়ার সিস্টেম চালু করে রাথা হয়েছে। এ কারণে সিলেটের যাত্রীরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। তাছাড়া অতিরিক্ত টাকা খরচ করে ঢাকা থেকে বিমানের ফ্লাইট ধরতে হচ্ছে তাদের।

অবস্থান কর্মসূচিতে অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব) সিলেট অঞ্চলের নেতৃবৃন্দসহ নানা শ্রেনী-পেশার মানুষ অংশ নেন।

আটাবের দাবিগুলো হলো- সিলেটের যাত্রীদের জন্য সপ্তাহে একটি সিলেট-জেদ্দা-সিলেট ফ্লাইটের ব্যবস্থা করা অথবা কমন ভাড়ায় নির্দিষ্ট আসন বরাদ্দ রাখা; বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে জেদ্দা, দুবাই লন্ডনসহ বিশ্বের বিভিন্ন গন্তব্যে নির্ধারিত কমন ভাড়া বহাল রাখা; সিলেট থেকে জেদ্দা-লন্ডন-দুবাই রুটে সরাসরি ফ্লাইটে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কমন ভাড়ায় সিলেটিদের আসন বরাদ্দ রাখা; সিলেট অঞ্চলের যাত্রীদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ পরিহার করা; সপ্তাহে ধার্যকৃত জেদ্দা-সিলেট দুটি ফ্লাইটে সিলেটের যাত্রীদের জন্য ‘ইউ’ ক্লাসে প্রয়োজনীয় আসন বরাদ্দ রাখা এবং ওসমানী বিমানবন্দরের রানওয়ের শক্তি বৃদ্ধির কাজ দ্রুতগতিতে সম্পন্ন করে সরাসরি ফ্লাইটের ব্যবস্থা করা।

এদিকে, সিলেটে এসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব) সিলেট জোনের নেতৃবৃন্দের পূর্ব ঘোষিত ছয় দফা দাবির প্রেক্ষিতে সিলেটের যাত্রীদের সকল দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে বাংলাদেশ বিমান কর্তৃপক্ষ। কর্মসূচী পালনের একপর্যায়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তারা আন্দোলনরত আটাব, মেট্রোপলিটন চেম্বার ও প্রবাসী নেতৃবৃন্দের নিয়ে বৈঠকে বসে দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন।

দুপুর ১২টার দিকে মজুমদারীস্থ বাংলাদেশ বিমানের কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের অনুরোধে আন্দোলনরত আটাব, মেট্রোপলিটন চেম্বার ও প্রবাসী নেতৃবৃন্দের নিয়ে বৈঠকে বসেন বাংলাদেশ বিমান সিলেট অফিসের ব্যবস্থাপক হেলাল উদ্দিন। দীর্ঘ ৩০ মিনিটের বৈঠকে তিনি আন্দোলনরত আটাব, মেট্রোপলিটন চেম্বার ও প্রবাসী নেতৃবৃন্দের অভিযোগ শুনেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিনি সিলেটের যাত্রীদের সুবিধার্থে সকল দাবি দাওয়া মেনে নেওয়ার আশ্বাস প্রদান করেন।

তিনি নেতৃবৃন্দের জানান, আগামী ৮ দিনের মধ্যেই বিমান বাংলাদেশের সেলস এন্ড মার্কেটিং (বিক্রয় ও বিপনন) পরিচালক সিলেটে এসে আটাব, মেট্রোপলিটন চেম্বার ও প্রবাসী নেতৃবৃন্দের সাথে বসে সকল দাবি দাওয়া শুনবেন।

বিমান বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের এমন আশ্বাসে পরবর্তী কর্মসূচী মূলতবী ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানা গেছে। গত ৬ মার্চ আটাব, সিলেট জোনের পক্ষ থেকে বিমানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। ওইদিন সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ জানান, দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ বিমান সিলেটের যাত্রীদের সাথে বিমাতাসুলভ আচরণ করে আসছে। বিমানের যাত্রীর প্রায় ৮০ ভাগই সিলেটের প্রবাসী হলেও তাদেরকে মানসম্মত সেবা দেয়া দূরে থাক, উল্টো হয়রানি করে আসছে লাল-সবুজের পতাকাবাহী বিমান। বিমানের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তারা নিজেদের স্বার্থ হাছিল ও বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোকে সুযোগ করে দিতেই রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানটিকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন আটাব নেতৃবৃন্দ। এর প্রেক্ষিতে তারা ঘোষণা দিয়ে কর্মবিরতি ও গণঅবস্থান কর্মসুচী পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আটাব।

এ বিষয়ে আটাব সিলেট জোনের সভাপতি আব্দুল জব্বার জলিল জানান, ‘আমরা সিলেটের যাত্রীদের দূর্ভোগের কথা চিন্তা করে আমাদের দাবিগুলো নিয়ে বিমান বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যে কর্মসুচী হাতে নিয়েছিলাম তা বিমান বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে মূলতবী ঘোষণা করা হলো। তিনি আরো জানান, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আশ্বাসকৃত দাবীগুলো পূরণ করা না হলে আরো কঠোর কর্মসুচী নিয়ে মাঠে নামবে আটাব নেতৃবৃন্দ।’

Share





Related News

Comments are Closed