Main Menu

ওসমানীনগরে ‘অর্থের লোভে’ কেয়ারটেকার খুন

বৈশাখী নিউজ ২৪ ডটকম: সিলেটের ওসমানীনগরে কানাডা প্রবাসীর বাড়ির কেয়ারটেকারকে হত্যার ঘটনার রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। অর্থের লোভে তাকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

রোববার (১৭ মার্চ) রাতে পানির ট্যাংকি থেকে হাত-পা বাঁধা ও মুখ থেঁতলানো অবস্থায় কানাডা প্রবাসী আলা উদ্দিনের বাড়ির পানির ট্যাংকি থেকে আনিস উল্লাহর (৬০) লাশ উদ্ধার করা হয়।

সোমবার এ ঘটনায় মৃতের স্ত্রী আফসা বেগম বাদী হয়ে ওসমানীনগর থানায় মামলা দায়ের করেন।

এ ঘটনায় ওসমানীনগরের দিগল গয়াছপুর গ্রামের আজমল আলীর ছেলে সুমন আহমদ (৩০), মঙ্গলপুর গ্রামের মো. ইব্রাহীমের ছেলে শাওন মিয়াকে (৩৫) মঙ্গলপুর গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তাদের দেয়া তথ্য মতে শেরপুর থেকে হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার সোরাবই গ্রামের প্রয়াত আবু মিয়ার ছেলে নানু মিয়াকে (২৪) গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে স্বামীর মোবাইলে কল করে তাকে না পেয়ে প্রবাসীর বাসায় যান স্ত্রী। এ সময় দরজা তালাবদ্ধ দেখে তিনি পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ বাসায় ঢুকে ছাদের পানির ট্যাংকি থেকে আনিস উল্লাহর হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করে।

জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানান, আনিস উল্লাহ মসজিদ বা বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে টাকা-পয়সা দান করেন। আসামি সুমন অনেক লোকের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে শোধ করতে না পেরে পলাতক অবস্থায় ছিল। ১৭ মার্চ রোববার শেরপুর বাজারে একটি চায়ের দোকানে বসে সুমন শাওন ও নানুর সাথে তাকে অপহরণ করে টাকা আদায়ের ছক করতে থাকে।

সুমন তাদের বলে, তাজপুরের একজন লোকের কাছে সে ১৫ লক্ষ টাকা ও ১৫ ভরি সোনা পায়। কিন্তু সেই লোক তাকে এ টাকা ও সোনা ফিরিয়ে দিতে নানা টালবাহানা করছে। তাই তাকে হত্যা করতে পারলে সুমন তাদের মোটা অংকের টাকা দেওয়ার প্রলোভন দেখায়।

রাত ৮টার দিকে তারা প্রবাসী আলা উদ্দিনের বাসায় যায়। নানু ও শাওনকে প্রবাসীর বাসায় রেখে সুমন বাসা ভাড়া নেওয়ার কথা বলে কেয়ারটেকার আনিস উল্লাহকে তার বাসা থেকে ডেকে আনে।

তিনজন মিলে প্রবাসীর বাসার ভিতরে ঢুকে ঘুরে ফিরে বাসার সকল কক্ষ দেখতে থাকে। এমন সময় সুযোগ বুঝে গামছা দিয়ে আনিস উল্লাহর মুখ বেঁধে ফেলে। তারপর সুতলি দিয়ে তার হাত-পা বেঁধে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে কিল-ঘুষি মারতে থাকে। এরপর সুমন ও নানু তার গলায় ফাঁস লাগিয়ে টান দিতে থাকে যতক্ষণ না তার মৃত্যু নিশ্চিত হয়।

পরে ছাদে পানির ট্যাংকির ভেতর তার লাশ লুকিয়ে রাখে। এরপর আসামিরা ঘণ্টাখানেক বাসার ভেতরে অবস্থান করে। তারা কেয়ারটেকারের স্ত্রী আফসা বেগমকেও মেরে ফেলার পরিকল্পনা করে।

সুমন ও শাওন ওই বাসা থেকে বের হয়ে বাসার আশেপাশে ঘুরাঘুরি করতে থাকে। পরে তারা ভিকটিমের স্ত্রীকে হত্যার সুযোগ না পেয়ে যার যার বাসায় চলে যায়।

সন্দেহভাজন আরও দুই আসামিকে ধরতে ওসমানীনগর থানা পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।

নিহত আনিস উল্লাহ (৬০) উপজেলার সাদীপুর ইউপির ধরকা গ্রামের প্রয়াত দুয়াব উল্লাহর ছেলে। তিনি কানাডা প্রবাসী আলা উদ্দিনের বাড়িতে কেয়ারটেকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।

Share





Related News

Comments are Closed