Main Menu

পাকিস্তানকে কড়া বার্তা ভারতের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পুলওয়ামা হামলার মাশুল পাকিস্তানকে দিতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

আজ শুক্রবার নয়াদিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে এই হুমকি দিয়ে তিনি বলেন, ‘হামলাকারীদের শাস্তি পেতেই হবে। এই কাজের প্রায়শ্চিত্ত তাদের করতেই হবে। একজনও পার পাবে না।’ এই হুমকির পাশাপাশি ভারত আজ পাকিস্তানকে দেওয়া ‘মোস্ট ফেভারড নেশন’–এর (এমএফএন) মর্যাদাও প্রত্যাহার করে নেয়। সকালে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই কথা জানান অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি।

জম্মু-কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগর থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দক্ষিণে পুলওয়ামার অবন্তীপুরায় গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে আত্মঘাতী হামলায় ভারতীয় আধা সামরিক বাহিনী কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের (সিআরপিএফ) ৪০ জন জওয়ান নিহত হন। আহত হন ৪১ জন। সন্ত্রাসবাদী সংগঠন জইশ ই মহম্মদ (জেইএম) এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। ওই ঘটনার পর রাজ্যের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং শুক্রবার শ্রীনগর যান।

প্রধানমন্ত্রীর হুমকির কিছু সময় পরেই ভারতে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার সোহেল মাহমুদকে তলব করা হয়। পররাষ্ট্রসচিব বিজয় গোখেল তাঁকে বলেন, পাকিস্তানে আশ্রিত সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে পাকিস্তানকে তার ফলভোগ করতে হবে।

এদিকে, পুলওয়ামার ঘটনায় পাকিস্তান সরকারিভাবে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছে, ওই ঘটনা নিন্দাজনক ও অসমর্থনীয়। ঘটনার সঙ্গে পাকিস্তান কোনোভাবেই জড়িত নয়। পাকিস্তানের এই ব্যাখ্যা যে ভারতের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়, পাকিস্তানি হাইকমিশনারকে তা জানানো হয়। পাকিস্তানে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার অজয় বিসারিয়াকেও ভারতে ডেকে পাঠানো হয়েছে।

কাশ্মীরে এই নৃশংসতম ঘটনার পর রাজনৈতিক ভেদাভেদ ভুলে বিরোধীরা সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছে। বৃহস্পতিবার নিহত জওয়ানদের স্মরণে নীরবতা পালনের পর উত্তর প্রদেশ সফররত কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভদেরা লক্ষ্ণৌয়ে তাঁর নির্ধারিত সংবাদ সম্মেলন বাতিল করে দেন। শুক্রবার কংগ্রেসের সভাপতি রাহুল গান্ধী বলেন, এই কঠিন সময়ে রাজনীতি ভুলে তাঁর দল সরকারের পাশে দাঁড়াবে। তিনি বলেন, ‘আগামী কয়েকটা দিন এই বিষয়ে সরকারের কোনো ধরনের সমালোচনা তাঁরা করবেন না। কারণ, এটা দোষারোপের সময় নয়। রাজনৈতিক বিতর্ক সৃষ্টির সময় নয়। কংগ্রেসসহ সব বিরোধীই সরকারের পাশে আছে। সেনাবাহিনীর পাশে আছে।’

প্রধানমন্ত্রী মোদি অবশ্য পাকিস্তানের নাম করেননি। তবে দেশটি যে পাকিস্তান, তা বুঝিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতে চরম অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু ষড়যন্ত্র করে তারা পার পাবে না। পাল্টা জবাব দেওয়া হবেই। দেশবাসীকে ভরসা দিচ্ছি, এই হামলার পেছনে যারা রয়েছে, শাস্তি তাদের হবেই। পাপের প্রায়শ্চিত্ত তাদের করতেই হবে।’ মোদি বলেন, ‘জওয়ানদের মৃত্যু বিফলে যাবে না। প্রতিশোধ নেওয়ার সম্পূর্ণ স্বাধীনতা সেনানীদের দেওয়া হয়েছে।’

পাকিস্তানকে ভারত ‘মোস্ট ফেভারড নেশন’–এর মর্যাদা দিয়েছিল ১৯৯৬ সালে। বিশ্ব বাণিজ্য সংগঠনের সদস্য হিসেবে ওই মর্যাদা পাকিস্তানকে ভারত দিয়েছিল। যদিও ভারতকে সেই মর্যাদা পাকিস্তান দেয়নি। এমএফএন মর্যাদাপ্রাপ্ত দেশ বৈষম্যহীন বাণিজ্যের যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকে। পায় শুল্ক হ্রাসের সুবিধা।

গতকালের হামলার পর আজ ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে জম্মুতে। কিছু মানুষ আক্রান্ত হন। আগুন জ্বালানো হয় বেশ কিছু দোকানে। পরিস্থিতির সামাল দিতে সেনাবাহিনী তলব করা হয়। জারি করা হয় কারফিউ। শহরের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পুরোনো জম্মু এলাকা। বিক্ষোভকারীরা পাকিস্তান বিরোধী স্লোগান দেয়। বিভিন্ন জায়গায় পথ অবরোধ করা হয়।

Share





Related News

Comments are Closed