Main Menu

লাউয়াছড়ায় টিলাভূমি দখলে নিয়ে গড়ে উঠছে বাড়িঘর

মোঃ আহাদ মিয়া, কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) থেকে: ফরেস্ট ভিলেজার নামীয় স্থানীয় লোকেরা লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের কালাছড়া বিট সংলগ্ন টিলাভূমি দখলে নিয়ে অবৈধভাবে বাড়িঘরের সাথে লেবু, আনারস, কাঠাল বাগান গড়ে তুলছে। অনেক পূর্ব থেকে বনভূমি দেখভালে ভিলেজাররা বনবিভাগের কাছ থেকে বসবাসের জন্য জমি বরাদ্ধ নিয়ে পর্যায়ক্রমে এসব জমির সাথে টিলাভূমি দখলে নিচ্ছেন। ফলে বনের টিলা সাবাড় ও সংকোচিত হচ্ছে প্রাণীর আবাসস্থল। ক্ষতি বয়ে আনছে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের ।

সরেজমিন লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের কালাছড়া বিট সংলগ্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বন্যপ্রাণী বিভাগের সংশ্লিষ্ট বিট অফিসের অদূরে ভিলেজাররা নতুন নতুন টিলাভূমি দখলে নিয়ে উঁচু টিলা কেটে আনারস বাগান, লেবু বাগান গড়ে উঠলেও বন্যপ্রাণী বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারীরা নির্বিকার। একের পর এক বড় বড় টিলাভূমি বেদখল হচ্ছে। কালাছড়া বনে স্থানীয় কয়েকটি পরিবার কয়েক যুগ ধরে বনের টিলাভূমিতে বসবাস করছে। তারা ফরেস্ট ভিলেজার হিসাবে বনভূমি দেখভালের জন্য বনবিভাগের কাছ থেকে দুই কিয়ার, আড়াই কিয়ার হারে ভূমি বরাদ্ধ নেয়। এসব ভূমির সাথে পর্যায়ক্রমে নতুন নতুন টিলাভূমি দখলে নিয়ে কয়েক একর উচুঁ নিচু টিলাভূমিতে নতুন নতুন বাড়িঘর গড়ে তোলা হচ্ছে। এসব টিলার ঝোপজঙ্গল ও গাছগাছালি কেটে চাষাবাদের জন্য সম্পূর্ণ সাবাড় করা হচ্ছে।

নতুন করে বনের টিলাভূমি দখল বিষয়ে গত বছরের ১৬ আগষ্ট কালাছড়া বিট সংলগ্ন সরইবাড়ি ও বাদে উবাহাটা গ্রামের আবুল হোসেন, ইসমাইল মিয়া, রহমান মিয়াসহ স্থানীয় এলাকাবাসী বন্যপাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বনকর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ প্রদান করেন। অভিযোগে বলা হয় বাগান থেকে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ জোর করে কেটে জবর দখল করে নিচ্ছেন।

তবে বনের টিলায় বসবাসরত বশর মিয়া ও স্থানীয় কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আবুল কালাম জানান, আমাদের বাপদাদার আমল থেকে ভিলেজার হিসাবে এখানে বসবাস করছি। ২০০১ সনে ২৫ হেক্টর ফলজ বাগানের জন্য ফরেস্ট প্রস্তাবনা দেয়। এরপর আমাদের প্রায় পৌণে দুই একর জমি দেয়া হলে আমরা সেখানে কাঠাল, লেবু বাগান গড়ে তুলি। নতুন করে কোন বাগান গড়ে উঠছে না। তারা আরও বলেন, যেখানে আনারস বাগান গড়ে উঠছে সেখানে বাফারজোন ছিল। বাফারজোনের গাছ কেটে আনারস বাগান করা হচ্ছে।

অভিযোগ বিষয়ে কালাছড়া বনবিট কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, এই বাসিন্দারা অনেকদিন ধরে ভিলেজারদের অংশে বসবাস করছে। তারা তাদের অংশে বাগান করছে। তবে টিলাকাটা, গাছ কাটা ও নতুন বাগান বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না বলে জানান। তিনি আরও বলেন, তারা প্রতিবছরই বাড়িঘর করছে। তবে এসব বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জানেন বলে জানান।

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বনকর্মকর্তা আবু মোহিত মোঃ মুছা বলেন, আসলে তারা এখন প্রকৃত ভিলেজার নয়। অনেক আগে তাদের ভূমি বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে। তবে কি পরিমাণ ভূমি বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে তা এই মুহুর্তে বলা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, তাদের বাড়িঘর নির্মাণ, টিলাকাটা বিষয়ে খতিয়ে দেখা হবে। তাছাড়া এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে অভিযোগের বিষয়টি আমার হাতে এখনো পৌঁছেনি।

Share





Related News

Comments are Closed