Main Menu

কমলগঞ্জে পাহাড়ি এলাকায় লেবু চাষে বেকারত্ব দূর

কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান সংলগ্ন জাগছড়া পাহাড়ি এলাকায় গড়ে উঠা লেবু বাগানে শত শত শ্রমিকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা রয়েছে। প্রায় ৮০ একর ভূমিতে কয়েকজন ব্যবসায়ীর তত্ত¡াবধানে লেবু বাগানের পাশা পাশি রয়েছে ডেইরী ফার্ম। তাই সরকারের শতভাগ বিদ্যুতায়নের লক্ষ্যে বাগান কর্তৃপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে চলছে বিদ্যুৎ লাইন টানার কাজ। কাভার্ড বৈদ্যুতিক লাইন স্থাপনে ঝুঁকি থাকবে না বলে বনবিভাগ জানিয়েছে। এখানে গড়ে উঠা লেবু বাগানের পাশাপাশি কাঁঠাল, নাগা মরিচ, আনারস, লেচু ও কলা চাষ করা হয়। প্রতিবছর এসব বাগান থেকে উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করছেন এসব বেকার যুবকরা।
জানা যায়, কমলগঞ্জ উপজেলার পাহাড়ি এলাকায় গড়ে উঠেছে লেবু বাগান। চাষটি লাভজনক হওয়ায় এ লেবু চাষের দিকে ঝুঁকতে শুরু করেছে অনেকেই। এতে পিছিয়ে থাকা স্থানীয়দের কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি আর্থিক সচ্ছলতা ফিরে আসতে শুরু করেছে। কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গল উপজেলার ১৪/১৫ জন বেকার যুবক এখন লেবু চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছে। লেবু চাষিরা বলেন, কমলগঞ্জের পাহাড়ি ভূমি লেবু চাষের জন্য উপযোগী জায়গা। এখানকার চাষিদের সরকার তথা কৃষি বিভাগ প্রযুক্তিগতভাবে প্রশিক্ষণসহ লেবু চাষে নিয়মিত সহযোগিতা করলে এ চাষে বিপ্লব ঘটানো যেত বলে অনেকের ধারণা। এতে যেমন তৈরি হতো অনেক শ্রমিকের কর্মসংস্থান তেমনি এখানাকার ঘরে ঘরে ফিরে আসতো আরো বেশি আর্থিক সচ্ছলতা। এর মধ্য দিয়ে সরকারের রাজস্ব আয় হতো প্রচুর। জাগছড়া পাহাড়ি এলাকায় গড়ে উঠা লেবু বাগান এলাকায়ও সরকারের শতভাগ বিদ্যুতায়নের অংশ হিসেবে ব্যবসায়ীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে টানা হয়েছে বিদ্যুৎ লাইন। পরিবেশ ও বন্যপ্রাণির কথা ভেবেই পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কাভার্ড বৈদ্যুতিক লাইন স্থাপনে কার্যক্রম করে কাজ শুরু করার চিন্তা ভাবনা রয়েছে। রেল, সড়কপথ আর বৈদ্যুতিক লাইন থাকার ফলে লাউয়াছড়ায় অনেক বন্যপ্রাণি মৃত্যু হয়েছে। এ বনের মাঝদিয়ে ব্রিটিশ আমলে নির্মিত প্রায় ৮ কি.মি. রেলপথ ছাড়াও সড়কপথ আর ৩৩ হাজার কেভি বৈদ্যুতিক লাইন স্থাপন রয়েছে।
স¤প্রতি জাতীয় উদ্যান ঘুরে বনবাসীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, উদ্যানের ভেতরের শেষ অংশে জেম্স ফিনলে কোম্পানীর চা বাগানের সীমানা ঘেষে বিগত কয়েক বছরে প্রায় ৮০ একর জমিতে গড়ে তোলা হয়েছে লেবু বাগান ও ডেইরী খামার। এখানে প্রায় দুই শতাধিক শ্রমিক কাজ করছে। কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গলের কয়েকজন ব্যবসায়ী এসব লেবু বাগান ও ডেইরী খামার গড়ে তোলেন। এখানের উৎপাদিত লেবু বিদেশেও রপ্তানী হচ্ছে বলে তারা জানান। লেবু বাগান মালিকরা তাদের লেবু বাগানে তদারককারীদের বসতঘরে বৈদ্যুতিক সংযোগের জন্য মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কাছে আবেদন করে। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি বনাঞ্চলের পরিবেশ ও বন্যপ্রাণির কথা চিন্তা করেই কাভার্ড লাইনের মাধ্যমেই বিদ্যুৎ সংযোগের খুঁটি স্থাপনের কাজ শুরু করে।
লেবু বাগান ও খামারের একাংশের মালিক শিপন মিয়া ও শিবলু মিয়া জানান, কয়েকজন বেকার যুবক মিলে ৮০ একর নিজের ক্রয়কৃত ভূমিতে লেবু বাগান ও ডেইরী খামার গড়ে তুলেছেন। বাগানে শ্রমিকদের বসতঘরে বিদ্যুৎ লাইন স্থাপনের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার অনুযায়ী ২০১৮ সালের মধ্যে মৌলভীবাজার জেলায় সবার জন্য বিদ্যুৎ সংযোগের অংশ হিসেবেই আমরা আবেদন করছি। এখানে বণ্যপ্রাণির কথা বিবেচনা করেই পল্লী বিদ্যুতের কাভার্ড লাইন করা হচ্ছে। আর এ লেবু বাগান নিজেদের ক্রয়কৃত ভূমি রয়েছে।
এ ব্যাপারে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মিহির কুমার দো বলেন, এ লেবু বাগান ব্যবসায়ীদের নিজস্ব ক্রয়কৃত ভূমিতে রয়েছে। লেবু বাগানে বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যাপারে তিনি বলেন, কাভার্ড লাইন হলে আশা করি বন্যপ্রাণির কোন ক্ষতি হবে না। আর তাদের ব্যক্তিগত ভূমিতে বিদ্যুৎ সংযোগ যেতেই পারে।

Share





Related News

Comments are Closed